ধান নষ্ট হওয়ায় নেত্রকোনার হাওর ঈদ আনন্দ নেই কৃষকের

আগাম জাতের ধান নষ্ট হওয়ায় ঈদ আনন্দ হারিয়ে ফেলেছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারগুলো। বীজের মান ভালো না হওয়ায় একমাত্র ফসল নষ্টে চরম ক্ষতির মুখে অন্তত কয়েক শতাধিক কৃষক। রোগ প্রতিরোধে কৃষি বিভাগ থেকেও দেওয়া হয়নি কোনো পরামর্শ, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তবে বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জনিয়েছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা।

নেত্রকোনার মদন-মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলার বিভিন্ন হাওরে আগাম জাতের ধান কাটতে এরইমধ্যে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য জমির ধান শুকিয়ে নষ্ট হয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র চাষিরা। মাহে রমজান শেষে ঈদ আসলেও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মনে তাই নেই ঈদ আনন্দ। একমাত্র ফসল হারিয়ে দিশেহারা মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওরের অন্তত কয়েক শতাধিক কৃষক। এছাড়াও জেলার বারহাট্টা, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা, নেত্রকোনা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য কৃষকের জমিতে এমনটাই হয়েছে।

ভুক্তভোগী ডিঙ্গাপেতা হাওরের কৃষক কদ্দুস মিয়াসহ একাধিক কৃষকের অভিযোগ, বাজার থেকে নামি-বেনামি বিক্রিত নিম্ন মানের বীজের চারা রোপন করেই এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। এ থেকে প্রতিকারে সময় মতো কৃষি বিভাগ থেকেও মাঠ পর্যায়ে দেয়া হয়নি কোনো পরামর্শ।

কদ্দুস মিয়ার প্রায় ৪০ কাঠা (৪শ শতাংশ) জমিতে কাঁচিই ধরা যাবে না। ধানের শীষ ও গাছগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যেগুলো গো খাদ্যও হবেনা। তিনি ছাড়াও একই এলাকার রিপন মিয়ার ২০ কাঠা, মনির হোসেনের ২২ কাঠা, লিয়াকত আলীর ৭০ কাঠা, রতন মিয়ার ৬০ কাঠাসহ অসংখ্য কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তবে ধান নষ্ট হওয়ার ব্যাপারে মোহনগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে তেমন কোনো তথ্য না থাকলেও বীজ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জনিয়েছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। তিনি জানান, হাওরের একমাত্র ফসল রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে কোথায় কোথায় ধান নষ্ট হয়েছে এবং তা কেন হয়েছে ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবছর নেত্রকেনায় বোরো আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর। এরমাঝে শুধুমাত্র হাওরেই আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার হেক্টর। তবে নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির পরিমানের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে সহায়তা প্রদানে ব্যবস্থা নিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

news24bd.tv/SHS