খালেদার মুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে মতবিরোধ

সমঝোতা না প্যারোল, নাকি আন্দোলন, কোন প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি- এ নিয়ে মতবিরোধ চলছে বিএনপির সংসদ সদস্য ও দলের নেতাদের মধ্যে।

সংসদ সদস্যরা বলছেন, দল চাইলে তারা খালেদা  জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতেও রাজী।

অন্যদিকে, সংসদের বাইরে থাকা নেতারা বলছেন, সংসদ সদস্যদের বক্তব্য দলীয় নয়, এটি তাদের ব্যক্তিগত মত।

প্রথম দফায় গেল মঙ্গলবার দলের তিন সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর তার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে বার্তা তুলে ধরেন।

পরে সচিবালয়ে আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন চাপাইনবাবগঞ্জ ৩ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ।  

তবে, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে সংসদ সদস্যের ওই বক্তব্য দলীয় নয় বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু।

তিনি বলেন, এমপিরা তাদের নিজ উদ্যোগেই গেছেন এবং হারুন যে বক্তব্য দিয়েছে সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত, দলের কথা না। আমি বিশ্বাস করি বেগম জিয়ারও এটা কথা না।

গেল বুধবার দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের বাকী চার সংসদ সদস্য। খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আইনী লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেন তারা।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব এবং উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটিই হবে। আমার সাথে ম্যাডামের কথা হয়েছে তিনি বলেছেন, তিনি নির্দোষ। জামিন তার অধিকার।

বিএনপির আরেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে একটা সমঝোতা করতে চাচ্ছি যে তারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। আমাদের নেত্রীও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দল থেকে যদি সিদ্ধান্ত দেয় যে প্রয়োজনে সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার, তাহলে আমরা তা করতেও রাজি আছি।

তবে তাদের সঙ্গে একমত নন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী। তার দাবি আন্দোলনই খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ।

তিনি বলেন, তাদের কাছে যে তথ্য আছে তারা তা দিয়েছে। এখন এসব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আমাদের এবং দলের। সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের ম্যাডামের সঙ্গেও দেখা করতে হবে। আমাদের জন্য একমাত্র রাজপথ খোলা আছে, জনগণকে সম্পৃক্ত করেই রাজপথে নামতে হবে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)