এবার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের নাম রাজাকারের তালিকায়!

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তোলপাড় চলছে। এর মধ্যে এবার রাজাকারের তালিকায় সুনামগঞ্জের একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের নামও প্রকাশ পেল। এর একজন সুবাস বখত ও অন্যজন তারই চাচা নজির বখত। সুবাস বখত একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং নজির বখত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।

‘একাত্তরের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা’য় তাদের নাম সংযোজিত হয়েছে।

গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত তালিকাটির ৩৪৪ নম্বর পাতায় ক্রমিক নং ৩০ এর ৪ নম্বরে রয়েছে সুবাস বখত ও ৫ নম্বরে রয়েছে তার চাচা নজির বখতের নাম।

এ তথ্য নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তিনি ও অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, সুবাস বখত একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং তার চাচা নজির বখত মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক। সুবাস বখত সুনামগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হোসেন বখতের ছেলে।

হোসেন বখত তার তিন ছেলে সুবাস বখত, মনোয়ার বখত নেক এবং শাহজাহান বখতকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা এবং সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সুনামগঞ্জ জেলা কমান্ডার নুরুল মোমেন বলেন, হোসেন বখতের হাত ধরেই সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তাকে বঙ্গবন্ধু একনামেই জানতেন। হোসেন বখত তার তিন ছেলেকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন যাদের মধ্যে সুবাস ছাড়া তিনি ও তার দুই ছেলের নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ত তালিকায় রয়েছে। আর নজির বখত নিজে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন।

সুবাস বখতের সহযোদ্ধা ও প্রবীণ আইনজীবী আলী আমজাদ বলেন, সুবাস এবং আমি ৫ নম্বর সেক্টরের টেকেরঘাট সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেছি। এ সেক্টরের অন্যতম একটি সম্মুখ সমর সংঘটিত হয়েছিলো কাউকান্দিতে। সেখান সুবাস এবং আমি একসঙ্গে যুদ্ধ করেছি। এ যুদ্ধের কথা আমি দুই বছর আগে আমার প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ’ বইয়ে লিখেছি এবং তাতে সুবাসের নামও রয়েছে।

‘হোসেন বখতের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা জেলার সবাই জানেন। এই পরিবারের দুই সদস্যের নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় থাকা দুঃখজনক,’

তিনি বলেন, জাতিকে বিভ্রান্ত করতে পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।

সুবাস বখতের ভাই ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাদের বখত বলেন, আমরা জানি না এটা কীভাবে ঘটল। কিন্তু, বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জার এবং দুঃখজনক। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে বিষয়টি মানতে কষ্ট হচ্ছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)