খেজুর রসে দানাদার (বিষ) ছিটিয়ে পাখি নিধন

মৎস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলে অভিনব কায়দায় খেজুর রসে দানাদার (বিষ) ছিটিয়ে দেশীয় প্রজাতির পাখি শিকার চলছে। এতে বিলের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে। আর সেই বিষে আহত পাখিগুলো খাচ্ছে চলনবিলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ। পাখি শিকার যে ‘দণ্ডনীয় অপরাধ’ তা যেনেও পাখির মাংসের স্বাদ ও সামান্য কয়েকটি টাকার লোভে এই পাখি শিকার করছে শিকারীরা। এমনটিই জানায় এলাকাবাসী।

চলনবিলের কলম ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক হারুন-অর রশিদ জানান, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করার মাছ খাওয়ার লোভে অতিথিসহ দেশীয় প্রজাতির পাখিরা বিলে ভিড় জমায়। আবার শীতে খেজুর গাছের রসের হাড়িতে পাখিদের আনাগোনা দেখা যায়। আর এই সুযোগেই কিছু লোভী শিকারী দানাদার (বিষ), কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে।

সোমবার সকালে সিংড়ার চলনবিলের কৃষ্ণপুর আত্রাই নদীর বাঁধে প্রায় কুড়িটি খেজুর গাছের রসের হাড়িতে দানাদার (বিষ) ছিটিয়ে বুলবুলিসহ শতাধিক দেশীয় পাখি শিকার করে শিকারীরা। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা পাখিগুলো উদ্ধার করেন। এবং দানাদার (বিষ) মিশ্রিত খেজুর রসের হাড়ি ও গাছ পানি দিয়ে ধুয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, কলম প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি প্রভাষক হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিবেশ কর্মী মনির হোসেন, মিজানুর রহমান প্রমূখ।

চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আইন থাকলেও চলনবিল এলাকায় সরকারি তেমন কোনো পদক্ষেপ ও তৎপরতা দেখা যায় না। তবে বিলের পাখি শিকার বন্ধে সকলের সমন্বিত পরিকল্পনা ও প্রতিটি আইনশৃংখলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন দরকার।

সিংড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা হওয়ায় পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা সভা করছে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)