চাচাতো ভাইকে নিয়ে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যা

শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসা স্কুল শিক্ষক স্বামীকে মারতে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলয়েড খাইয়েছিলেন স্ত্রী। নেত্রকোনার সদর উপজেলায় উজ্জ্বল চৌধুরী হত্যার ঘটনায় ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্ত্রী মনি বেগম। পারিবারিক কলহের জেরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ কাজ করা হয় বলেও জানান তিনি।

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৭ জানুযারি সকালে সদর উপজেলার কোনাপাড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ের জামাতা উজ্জ্বল চৌধুরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একটি জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। উজ্বল মদন উপজেলার গোবিন্দ্রশী উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগের শিক্ষক। দাম্পত্য জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।

লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ উজ্বলের স্ত্রী মনি, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালকসহ কয়েকজনকে ওইদিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।

২৮ জানুয়ারি স্ত্রী মনি বেগম ও তার চাচাতো ভাই আনোয়ারুল ইসলাম জয়কে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে যায় এবং আলামত উদ্ধার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় স্ত্রী ও তার ভাই।

অভিযুক্তদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, প্রায় ৯ বছর পূর্বে নেত্রকোনা সদরের সিংহের বাংলা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের মনির সাথে মদন উপজেলার উজ্জ্বলের বিয়ে হয়। উভয়ের মধ্যে বিরাজমান সন্দেহ প্রবণতা নিয়ে প্রায়শই ঝগড়া বিবাদ হত। উজ্জ্বল বিভিন্নভাবে ঋণগ্রস্ত হওয়ায় সংসারে অভাব অনটন ছিল। ১ বছর পূর্বে ঝগড়া বিবাদের রেশ ধরে মনি বেগম ২ সন্তানসহ নেত্রকোনা সদরের কোনাপাড়া বাবার বাড়িতে চলে আসেন। মাঝে মধ্যেই স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য শ্বশুরবাড়িতে উজ্জ্বলের যাওয়া-আসা ছিল। খুনের হওয়ার ১০ দিন আগে লম্বা ছুটিতে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে আসেন উজ্জ্বল।

গত ২৬ জানুয়ারি মনি বেগম কোমল পানীয় সাথে চারটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্বামীকে দেয়। সন্ধ্যার দিকে ঝগড়া বিবাদের কারণে উজ্জ্বল বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে মনি বেগম মোবাইলে টাকা দেবে বলে স্বামীকে বাড়ির পাশে জঙ্গলে আসতে বলে। সেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী মনি বেগমের চাচাতো ভাই আনারুল ইসলাম জয় (১৫) বাইসাইকেল যোগে পূর্ব থেকেই অবস্থান করছিল। ঘুমের ওষুধ গ্রহণের কারণে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে উজ্জ্বলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় এবং লাশ টেনে হিঁচড়ে জঙ্গলে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)