আবেদন খারিজের ৪ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেলেন সাবেক এমপি আউয়াল

দুর্নীতির মামলায় পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এবং পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও  তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন আবেদন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে এই আদেশ দেন জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আ. মান্নান। তবে ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জামিন পেলেন আসামিরা।

এরপর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পিরোজপুর ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন এর আদালতে জামিন বাতিলের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী দেলওয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মুনসুর উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘শুনেছি জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আ. মান্নানকে আইন মন্ত্রণালয় আজই বদলি করেছে। এরপর যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিন দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া আর কোনও বিচারক বর্তমানে জেলায় নেই, যিনি দায়িত্ব বুঝে নিতে পারবেন। ’

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক খান পান্না জানান, সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল এর বিরুদ্ধে দুদক যে মামলা করেছে তাতে কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স না থাকায় আমরা জামিনের আবেদন করি।

তিনি বলেন, জেলা ও দায়রা জজ সম্ভবত আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে জামিনের আবেদন নাকচ করে। এর কিছু পরেই তারা জানতে পারেন জেলা ও দায়রাজজ আব্দুল মান্নান এর স্থলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ হয়েছেন ২য় যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিন। এর পরই সকল আইনজীবীরা পুনরায় তার আদালতে জামিনের আবেদন করেন। ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন শুনানি শেষে একেএমএ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভিন কে ২ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। তবে জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আ. মান্নান আবেদন খারিজ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর আসামিরা মেডিকেল ওয়ার্ডে যাওয়ার আবেদন করেন। বিচারক তাদের চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দেওয়ার আদেশ দেন। এরমধ্যেই বিচারক পরিবর্তন হলে আসামিরা ফের জামিন পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

একেএমএ আউয়াল ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুইবার পিরোজপুর-১ (সদর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন।

এদিকে সকালে সাবেক সংসদ সদস্য এবং পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন আবেদন বাতিল হলে আদালত পাড়াসহ পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ আদালত পাড়াসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাঠি চার্জ করে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে শহরের সকল দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। নেতা কর্মীরা সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে অগ্নিসংযোগ করায় বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। এছাড়া জেলা জজের অপসারণ দাবি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করেছে পিরোজপুরের আইনজীবীগণ। এ নিয়ে আইনজীবীদের সাথে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)