রংপুরে বিপদসীমার ওপরে নদ-নদীর পানি, ফের প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

রংপুর অঞ্চলের তিস্তা,ধরলা, ব্রহ্মপুত্র সহ সব নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।  আগের বন্যার ধাক্কা সইতে না সইতে আবারো বন্যার মুখোমুখি তিস্তা ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র পারের মানুষ। এ যেন মরার ওপর খারার ঘা।  

ভাঙনে বিলীন গ্রামের পর গ্রাম বসতবাড়ি, আবাদি জমি। একের পর এক ভাঙনের কবলে দিশেহারা তিস্তা ধরলা পারের মানুষ। তিস্তার আগ্রাসী এই ভাঙনের কবলে পড়েছে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লটারী  ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম ইছলি গ্রাম দুটি।  

দুই একটি বাড়ী ছাড়া গত ২ দিনে তিস্তার ছোবলে উজার হয়েছে গ্রাম দুটি। উজানের ঢল আর প্রবল বৃষ্টিতে তিস্তা ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র ফিরে এসেছে প্রমত্তা রুপে। এই তিনটি নদীর বুক ভরা পানিতে ভাসিয়ে নিচ্ছে কষ্টে গড়া বসতবাড়ী,ফসল গাছপালা।  

আরও পড়ুন: কমলো স্বর্ণের দাম, আজ থেকেই কার্যকর

প্লাবিত করছে গ্রামের পর গ্রাম। সেই সাথে ভাঙ্গছে বাপ দাদার সুত্রে পাওয়া ভিটে-বাড়ি। ঘরবাড়ি আর গোছানো সংসার গুটিয়ে নিয়ে অনেকেই উচু যায়গায় নিচ্ছেন আশ্রয়। কেউ আবার শেষ সম্বল ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে আশ্রয় নিয়েচ্ছেন রাস্তাঘাটে। দিন কাটাছে অনাহারে-অর্ধাহারে। তিস্তার অগ্রাসি এই ভাঙ্গনের কবলে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লটারী  ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম ইছলি গ্রাম।  

একই অবস্থা তিস্তার বাম তীরের গংগাচড়া উপজেলার নোহালী,কোলকোন্দ, লক্ষীটারী ,গজঘন্টা, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া,মধুপুর, লালমনিরহাটের মহিষখোচা, গোকুন্ডা, গড্ডিমারী,খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে। সেখানেও দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।  

দীর্ঘদিনের ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর তিস্তার ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামগুলো।

রংপুরের গংগাচড়ার নোহালী গ্রামে আকাব্বর বলেন, দুই দিন থাকি ফির পানি আইশোছে বাড়িত সকাল থাকি ভর্তি হয়া গেইছে। হামরা এলা ঘরের জিনিষ পাতি বাইরোত নিয়া যাইতোছি।  

আরও পড়ুন: ভারত সীমান্তে যাওয়ার সময় কেঁদে বুক ভাসালো চীনা সৈন্যরা (ভিডিও)

গত দুই দিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্ট বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।   চতুর্থ দফার এই বন্যায় রংপুর অঞ্চলের নদী বেষ্টিত ৬৫৩ চরের  লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের।  

লটারী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হায়দার আলী, পানিবন্দি ও ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে বললেন, শত শত পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে,কেউই আমাদের পাশে দাড়াচ্ছেন না,কি হবে এসব পরিবারের।   তিনি নদীভাঙ্গা এসব মানুষের জন্য সরকারকে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।  

news24bd.tv নাজিম