স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ে একটি সামাজিক বন্ধন। সেই সাথে দম্পতির পারস্পরিক বন্ধুত্ব, শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা, ঝগড়া, একে অপরের ঢাল হয়ে যেকোন বিপদ-আপদে দাঁড়িয়ে থাকবার অদৃশ্য প্রতিশ্রুতি। যাকে আমরা বিশ্বাস বলে থাকি। আর ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন।
জীবনসঙ্গী হিসাবে কে কাকে বেছে নেবে এবং কোন বয়সে বিয়ে করবে, সে ব্যাপারে একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। সেই ব্যক্তি সাধারণ হোক কিংবা অসাধারণ কিংবা হোক সে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন? বিচার করুন নিজেই।
সম্প্রতি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা শমী কায়সার বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বর, রেজা আমিন সুমন, পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসা সূত্রে পরিচয় এবং শেষে পরিণয়। এটি শমী কায়সারের তৃতীয় বিয়ে। এর আগে দুটো বিয়ে করেছেন তিনি। প্রথম বিয়েটা হয় তার ১৯৯৯ সালে। বর ছিলেন ভারতীয় নাগরিক ব্যবসায়ী অর্ণব ব্যানার্জী রিঙ্গো। দুই বছর পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে মোহাম্মদ আরাফাতকে বিয়ে করেন শমী। নানা কারণে সেই সংসারও টেকেনি তার। আর রেজা আমিনের দ্বিতীয় বিয়ে এটি। তাদের দুজনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দিয়ে আশির্বাদ জানান জনপ্রিয় নির্মাতা এবং শমী কায়সারের বন্ধু চয়নিকা চৌধুরী। ফেইসবুকে ছবি দিতেই ভাইরাল হয় শমী কায়সারের বিয়ের ঘটনা।
সেই সাথে উন্মোচিত হতে থাকে আমাদের অসুস্থ মানসিকতা।
আরও পড়ুন:
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠশালার ঘর ভেঙে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা
সেলিব্রেটি বলেই এমন মন্তব্য? নাকি পৈশাচিক আনন্দ? নাকি নিতান্তই বিনোদন? এগুলোর কোনকিছুই নয় বলে আমার মত। এগুলো শুধুই অসুস্থ মানসিকতা। অন্যকে হেয় করতে পারলেই আমাদের সুখ। বিশেষ করে সে যদি নারী হয়, তবে তার সবকিছুই অপরাধ। নারী শরীর মানেই আমাদের অসুস্থ মগজে খেলা করে যৌনতা। নারী স্বাধীনতা মানেই আমাদের কাছে পতিতা। নারীর পোশাক মানেই আমাদের চোখে অশ্লীলতা, ধর্ষণের কারণ। দেশ জুড়ে যখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠছে, ধর্ষকের শাস্তি জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, ঠিক তখন ফেইসবুক কুরুচি মন্তব্যে সয়লাব। কথার ছুরিতে নগ্ন করা হচ্ছে নারীর ব্যক্তি জীবন। বাক্যের পর বাক্য মিশিয়ে সুপ্ত অবস্থায় লুকায়িত ধর্ষণ মনোভাব প্রকাশ করা হচ্ছে অনায়াসে।
নিজেদের ভেতরের অসুস্থ ধারণা সবার উপরে চালিয়ে দেওয়া যেনো অন্যতম দায়িত্ব। প্রতিটি মানুষ আলাদা। নিজ নিজ স্বত্ত্বায় উদ্ভাসিত। কেউ কারোরটা খায়ও না, পরেও না। তাহলে কেনো এই নষ্ট মানসিকতা? সবকিছুতেই কেনো আমাদের সমস্যা? কেনো অন্যদের কাজ নিয়ে আমাদের মতামত দিতে হবে? কেনো? আয়নার সামনে দাঁড়ান। কাকে কি বলছেন কেনো বলছেন আর না বললে আপনার ক্ষতিটা কি হচ্ছে তা জিজ্ঞাসা করুন? চিনুন নিজেকে। কে আপনি? আপনার মধ্যে অসুস্থ মানসিকতার প্রতিযোগিতা নেই তো?
লেখক: সুকন্যা আমীর, রিপোর্টার, নিউজটোয়েন্টিফোর।
news24bd.tv কামরুল