শহর আনন্দ না দিলে তা বর্বরদের জঙ্গল

টোকিওর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হিবিয়া সিটি। এখানে রয়েছে প্রায় শতবর্ষ প্রাচীন মেট্রোপলিটান হিবিয়া মিলনায়তন, জাতীয় উদ্যান এবং শতবর্ষ পুরনো বিশ্ববিখ্যাত ইম্পেরিয়াল হোটেল।  

এই হিবিয়া শহরের পার্শ্ববর্তী শহর হচ্ছে শিনবাশি, এখানে আমি জাপানি ভাষা শিখেছি, ছাত্রকালীন পার্ট টাইম জব করেছি এবং প্রথম ফুলটাইম চাকরিও করেছি কয়েক বছর। তখন থেকেই হিবিয়ার সঙ্গে আমার গভীর ঘনিষ্ঠতা।  

হিবিয়া হল এবং ইম্পেরিয়াল হোটেলে অনেকবার গিয়েছি নানা কাজে। দুটো স্থাপত্যই নানা কারণে বিখ্যাত। একটি কারণ ১৯৪৩ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এই হলে বক্তৃতা করেছিলেন।

এবং হলের পাশেই ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রায় তিন মাস অবস্থান করেছিলেন তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী যুদ্ধ মন্ত্রী জেনারেল তোজো হিদেকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য।  

যুদ্ধের পর এই হলে অনেক সভা, সেমিনার, সঙ্গীতানুষ্ঠান, নাটক ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজও হচ্ছে। ২০১২ সালে গিয়েছিলাম গিয়েছিলাম ঘুরতে।

আরও পড়ুন: আতঙ্কে কাটছে ম্যারাডোনার জন্মদিনের প্রহর

তখন দেখতে পেয়েছিলাম নিচের একতলায় একটি অ্যান্টিক রেস্টুরেন্ট, সেখানে বসে কফি পান করেছিলাম এবং ঘুরে ঘুরে প্রদর্শিত পুরনো সংগ্রহ দেখছিলাম।  

কিন্তু নেতাজির কোনো চিহ্ন খুঁজে পেলাম না।   ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে ভিজিটর বুকে বাংলায় মন্তব্য লিখে চলে এলাম। শীত আসছে ভাবছি আবার যাব সেখানে ব্লু মাউন্টেন কফির স্বাদ নিতে।

পুরনো দিনের গান বাজে দোকানটিতে সারাদিন মিহি আওয়াজে। দারুণ রোমান্টিক এক পরিবেশ। বস্তুত টোকিও একটি আগাগোড়াই রোমান্টিক মহানগর। কত জাদুঘর যে এখানে রয়েছে তার হিসাব নেই!   একটি শহর বা মহানগর যদি আনন্দই না দিল তাকে বর্বরদের জঙ্গল বলাই ভালো! প্রবীর বিকাশ সরকার, ছড়াকার, উপন্যাসিক, গবেষক ও সম্পাদক।

news24bd.tv তুষার