রাসুল (সা.)-এর কারণে আমরা কোরআন পেয়েছি, হাদিস পেয়েছি এবং দ্বিনের সঠিক পথ পেয়েছি। ফলে তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করা অপরিহার্য।
দরুদ পাঠের নির্দেশ : স্বয়ং আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
দরুদ পাঠের বিধান : মহানবী (সা.)-এর নাম বললে ও শুনলে তাঁর প্রতি দরুদ পড়া ওয়াজিব। তবে বারবার তাঁর নাম বললে ও শুনলে প্রথমবার দরুদ পড়া ওয়াজিব, অন্যান্য বার মুস্তাহাব। মুখে উচ্চারণ করলে যেমন দরুদ ও সালাম ওয়াজিব, তেমনি কলমে লিখলেও ওয়াজিব। জীবনে একবার দরুদ পড়া ফরজ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি অপমানিত হোক, যার সামনে আমার নাম উচ্চারণ করা হলে দরুদ পাঠ করে না। ’ (মিশকাত : ৯২৭)
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সেই ব্যক্তি কৃপণ, যার কাছে আমার নাম উচ্চারণ করা হলে দরুদ পাঠ করে না। ’ (মিশকাত, হাদিস : ৯৩৩)
দরুদ পাঠের ফজিলত : দরুদ পাঠে রয়েছে অনেক ফজিলত। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ১০টি রহমত বর্ষণ করেন। ’ (মুসলিম, মিশকাত, হাদিস : ৯২১)
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ শরিফ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ১০টি রহমত বর্ষণ করেন, ১০টি পাপ মোচন করেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। (নাসায়ি : ১/১৪৫, মুসনাদে আহমদ : ১/১০২)।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার কাছে অতি উত্তম হবে ওই ব্যক্তি, যে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে। (তিরমিজি)
মহানবী (সা.) আরো বলেন, জমিনে আল্লাহর একদল বিচরণশীল ফেরেশতা রয়েছে, যারা আমার উম্মতের সালাম আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয় (নাসায়ি ও দারেমি)
তিনি আরো বলেন, আমার প্রতি কেউ দরুদ পাঠ করলে আমি তার উত্তর দিই। (আবু দাউদ, বায়হাকি)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কেউ আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম দিলে আমি তা শুনতে পাই। আর দূর থেকে সালাম দিলে আমাকে তা পৌঁছানো হয়। (বায়হাকি)। হজরত আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ৭০টি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাঁর জন্য ৭০ বার ইস্তিগফার করেন। (মুসনাদ আহমদ, মিশকাত, হাদিস : ৯৩৫)
মহানবী (সা.) অন্যত্র বলেছেন, জিবরাঈল (আ.) আমাকে বলেছেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি সুসংবাদ দেব, যা আল্লাহ তাআলা আপনাকে বলেছেন তা হলো, যে ব্যক্তি আপনার ওপর দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন, আর যে ব্যক্তি আপনাকে সালাম দেবে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি শান্তি বর্ষণ করবেন। (মুসনাদ আহমদ)।
চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত অমানবিক: চরমোনাই পীর
আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘাত এড়াতে লালপুরে ১৪৪ ধারা জারি
দোয়া কবুল হওয়ার উত্তম পন্থা হলো, প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করা, তারপর প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা। অতঃপর কাঙ্ক্ষিত জিনিস স্বীয় প্রভুর কাছে চাওয়া। ওমর ফারুক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ না করা হলে সেই দোয়া আসমান ও জমিনের মাঝে স্থগিত থাকে। সেই দোয়া আল্লাহর দরবারে পৌঁছে না (তিরমিজি)।
দরুদ ও সালাম প্রেরণ : মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম উভয়ই প্রেরণ করতে হবে। ইমাম নববী বলেছেন, রাসুল (সা.)-এর ওপর যখন কেউ দরুদ পাঠ করে, তখন তার সালামও পেশ করা উচিত। শুধু দরুদ বা সালাম পেশ করে ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়। ফলে ‘আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম’ (তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম) বলতে হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘...হে মুমিনরা! তোমরা নবীর ওপর দরুদ পাঠাও ও সালাম পাঠাও। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
news24bd.tv নাজিম