স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ফয়ছল চৌধুরী

২০২১ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে লোদিয়ান রিজিওনে লিষ্টের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ফয়ছল চৌধুরী এমবিই। প্রথমবারের মত স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কেউ  এমএসপি  প্রার্থী হচ্ছেন।

আগামী জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে লেবার পার্টির অভ্যন্তরীন দলীয় নির্বাচন। এতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে দলের সাধারণ সদস্যরা লোদিয়ান রিজিওনের নমিনেশনপ্রাপ্ত সর্বমোট ১০ জন প্রার্থীকে ক্রমানুসারে ভোট দিবেন। উক্ত নির্বাচনে পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে নির্ধারণ করতে ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন ফয়ছল চৌধুরী। স্কটিশ পার্লামেন্টের রিজিওন্যাল লিস্টে সাধারণত ১ম থেকে ৪র্থ স্থানে অবস্থানকারীরা এমএসপি হিসাবে চুড়ান্ত মনোনয়ন পেয়ে থাকেন।

২০১৭ সালে বৃটেনের জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির হয়ে এডিনবরা সাউথ ইষ্ট আসনে লড়াই করেন ফয়ছল চৌধুরী। ২০১৪ সালে স্কটিশ রেফারেন্ডাম চলাকালীন ‘বাংলাদেশিজ ফর বেটার টোগেদার ক্যাম্পেইন‘ এর সমন্বয়কারী ছিলেন তিনি। ঐতিহাসিক গনভোটে ’নো’ ক্যাম্পেইনে স্থানীয় বাংলাদেশীদের অংশগ্রহন ছিল উল্লেখযোগ্য।

স্কটিশ রাজধানী শহর এডিনবরার বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও ব্যাবসায়ী ফয়ছল হোসেন চৌধুরী এমবিই বেড়ে ওঠেন এডিনবরা শহরের নিউ টাউন এলাকায়। হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ থানার বদরদি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেন। মা বাবার সাথে অতি আল্প বয়সে বয়সে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। পরিবারের সাথে প্রথমেই ম্যানঞ্চেষ্টার এবং পরে এডিনবরায় বসবাস শুরু করেন। বাবা শারিরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বড় ছেলে হিসাবে তরুন বয়সেই পরিবারের হাল ধরেন ফয়ছল চৌধুরী। তখন থেকেই পারিবারিক ব্যাবসা প্রতিষ্টান বারান্দা রেষ্টুরেন্ট পরিচালনার সাথে জড়িত হয়ে পড়েন তিনি।

এডিনবরা এন্ড লোদিয়ান রিজিওন্যাল ইকুয়্যালিটি কাউন্সিল (এলরেক) এর চেয়ারম্যান হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য ২০০৪ সালে ব্রিটেনের রাণী কতৃক ‘এমবিই‘ খেতাবে ভূষিত হন তিনি।

আরও পড়ুন: প্রথম ধাপে ২৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে

স্কটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচন পদ্ধতি:

স্কটিশ পার্লামেন্টের ভোটিং পদ্ধতিতে কে বলা হয় এডিশনাল মেম্বার সিস্টেম বা এ.এম.এস। এই পদ্ধতিতে একজন ভোটার দুইটি ব্যালটে ভোট দেন। প্রথম ভোটটির মাধ্যমে যার যার সংসদীয় আসন থেকে একজন পছন্দের প্রার্থীকে মনোনীত করা। দ্বিতীয় ব্যালটে যে ভোটটি দেয়া হবে সেটি হচ্ছে সবগুলো রাজনৈতিক দলকে ক্রম অনুসারে সাজানো যেমন:– ১ম স্থান, ২য় স্থান, ৩য় স্থান ইত্যাদি। পুরো স্কটল্যান্ডে ৭৩ টি পৃথক পৃথক সংসদীয় আসন রয়েছে, এসব আসন থেকে ৭৩ জন এমএসপি নির্বাচিত হবেন। অন্যদিকে, পুরো স্কটল্যন্ডকে ৮টি রিজিওনে বিভক্ত করা হয়েছে যা লিস্ট নামে পরিচিত। প্রতি রিজিওনে ৭ জন করে মোট ৫৬ জন এমএসসি নির্বাচিত হবেন দ্বিতীয় ব্যালটের (লিস্ট) ভোটের ফলাফল অনুযায়ী। ২য় ব্যালট মানে হচ্ছে যে দল বেশী ভোট পাবে সেই ভিত্তিতে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হবেন।

এর ফলে, স্কটল্যান্ডে একজন ভোটারকে প্রতিনিধিত্ব করেন মোট ৮ জন এমএসপি। ১ জন হলেন নিজ আসনের এমএসপি এবং অপর ৭ জন হলেন রিজিওন্যাল এমএসপি।

একটি জটিল গাণিতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন দল থেকে কতজন লিস্ট এমএসপি নির্বাচিত হবেন তা নির্ধারন করা হয়ে থাকে। সাধারণত একটি পার্টির অভ্যন্তরীন  তালিকার ক্রম অনুসারে লিস্ট থেকে এমএসপি হিসাবে নির্বাচিত হন। সাধারণত প্রতিটি  শীর্ষ রাজনৈতিক দলের লিডার গণ লিস্টের প্রথম স্থানে অবস্থান করেন । প্রথম স্থানে থাকার অর্থ হচ্ছে নিশ্চিত ভাবে এমএসপি হিসাবে নির্বাচিত হওয়া।

news24bd.tv আহমেদ