মাদারীপুরে নদীগুলোর বেহাল দশা

নাব্যতা সঙ্কটে হুমকির মুখে নৌ-পথ 

কুমার ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে প্রায় আড়াই শ বছর আগে মাদারীপুরের গোড়া পত্তন। এক সময় এ জেলার মানচিত্রে পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, পালরদী, কুমার, নিন্ম কুমার, টরকী ও ময়নাকাটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলের সমৃদ্ধ এই বন্দর। সেচ সৌসুমে এসব নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষকরা ফলাতেন সোনার ফসল। কালের আবর্তে নদীগুলো হারাচ্ছে তার নাব্যতা। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নৌ-যোগাযোগ, চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শিবচরের ময়নাকাটা নদী এখন অস্তিত্বহীন। ময়নাকাটার বুক জুড়ে ফসলের আবাদ। অপরদিকে কালকিনির টরকী ও পালরদীরও একই দশা। বর্ষা সৌমুমে দু-তিন মাস পানি থাকলেও বাকি সময় থাকে কোথাও হাটু পানি, কোথাও বা ফসলের মাঠ।

জেলার শিবচরের হাজী শরীয়তুল্লাহ সেতু সংলগ্ন, সদর উপজেলার পাঁচখোলা, ধুরাইল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীতে জেগে উঠেছে নতুন নতুন একাধিক চর। সদর উপজেলা, রাজৈরের কুমার ও নিন্ম কুমার নদীরও বেহাল দশা।

শুধু অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এক সময়ের প্রমত্ত কুমার। কোথাও সরু খালের মত বয়ে চলছে, আবার কোথাও বুক জুড়ে সবুজের সমারোহ এই নদীর।  অপরদিকে সর্বনাশা পদ্মা তার অস্তিত্ব ধরে রাখলেও সেই খরস্রোতা ভয়ঙ্কর রূপ আর নেই।

বিভিন্ন এলাকার একাধিক কৃষকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে যেমন বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টি বন্যায় রূপ নেয়, তেমনি শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির তীব্র সঙ্কটে পড়েন কৃষকরা।

নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মখীন হচ্ছেন।  নৌ-পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ।

শিবচরের চরজানাজাত এলাকার টিপু মুন্সি জানান, ‘এই হান দিয়ে হারা বছর অনেক বড় বড় লঞ্চ, ইষ্টিমার গেছে। কিন্তু এখন চৈত্রের আগেই পানি কমে যায়। মাঝে মাঝে দেহি ফেরি মাজখানে আটকাই আছে। ’

এ ব্যাপারে কথা বলতে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহার কার্যালয় গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।  

এ প্রসঙ্গে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো.ওহিদুল ইসলাম জানান, ‘সরকার নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছে।  আড়িয়াল খাঁ,কুমারসহ একাধিক নদী খনন করে তার নাব্যতা ফিরিয়ে আনার কাজ করছে। ’ রিজভী/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর