কানাডার টরন্টোর একটি এলাকাকে স্থানীয় বাংলাদেশিরা ‘বেগম পাড়া’ ডাকে। এই বেগম পাড়ার বেগমদের সাহেবরা তাঁদের সঙ্গে থাকেন না। তাঁরা বাংলাদেশে থেকে কষ্ট করে টাকা বানান; টাকা বানাতে ক্লান্তি লাগলে পরে এসে সেখানে পরিবারের সঙ্গে ‘আরামের’ সময় কাটান।
এই বাংলাদেশি ‘বেগম’দের আরাম-আয়েশ দেখলে মোগল বেগমরাও হিংসায় জ্বলতেন। তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টগুলো বিলাসসামগ্রীতে ভরা। তাঁদের সন্তানেরা সে দেশের ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে।
‘বেগম’দের একমাত্র কাজ হলো ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করা আর ‘আরাম’ করা। সারা কানাডায় এ রকম অনেকগুলো ‘বেগম পাড়া’ আছে।
বেগমদের সাহেবরা তো ধনীই হবেন; উপরন্তু বিদেশে তাঁরা ‘সেকেন্ড হোম’ বানিয়েছেন বিনিয়োগকারী কোটায়। খরচ বেশি নয়; মাত্র দেড় লাখ কানাডীয় ডলার অর্থাৎ এক কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিলেই কানাডা আপনাকে নাগরিকত্ব দেবে। বেগমদেরও এই পরিমাণ টাকা দিতে হয়েছে। বিনিময়ে তাঁরা পেয়েছেন প্রবাসে নিরাপদ ঘর।
বেগম পাড়ার সাহেবরা বছরের বেশির ভাগটা সাবেক ব্রিটিশদের মতো, সাবেক জমিদারদের মতো, সাবেক পাঞ্জাবি শাসকদের মতো দেশেই কাটান। টাকা বানাবার মেশিন চালু রাখেন। তাহলেও এই দেশ এখন আর তাঁদের শেষ ঠিকানা নয়, প্রয়োজন ফুরোলে তাঁরাও চলে যাবেন, যেমন চলে গেছে ব্রিটিশ আর পাকিস্তানিরা।
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম এই গল্পটা গতবছর বলেছিলেন ব্রিটেনের ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায়। এ নিয়ে গতবছর লিখেছিলেন ফারুক ওয়াসিফ। শিরোনাম বেগম পাড়ার সাহেব।
ভিসির কাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে বেরোবি
এটাই ছিলো টিকা উৎপাদক কোম্পানির সুপারিশ
রাত পোহালে নির্বাচন, কে বেশি শক্তি দেখাচ্ছে?
গতবছরের এই দিনে আমি লিখেছিলাম, এই রাষ্ট্রের কাছে আমার শুধু জানতে চাওয়া এই বেগমপাড়ার মালিকরা কারা। রাষ্ট্রের এতো এতো গোয়েন্দারা কী করে? কারা সেই রাজনীতিবিদ, কারা সেই আমলা জানতে চাই যারা জনগনের টাকায় সব সুযোগ সুবিধা নেন কিন্তু এই দেশটা তাদের ঠিকানা নয়।
আফসোস বছর পেরিয়ে গেল, পদ্মা যমুনায় বহু জল গড়ালো, কানাডায় সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর ভাইসহ অনেক আন্দোলন করলেন, আদালত নির্দেশ দিল কিন্তু এই এক বছরে আরও কিছু সাহেবের সংখ্যা বাড়া ছাড়া কার্যকর কিছু হলো না। তবু সাহেবদের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ চলুক। আঁধার পেরিয়ে কোনদিন যদি আলো আসে!
শরিফুল হাসান, উন্নয়ন কর্মী
news24bd.tv নাজিম