মৃত স্ত্রীকে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক স্বামীর!

স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে গুলশানের বাসায়। এরপর স্বামী সেই স্ত্রীর নিথর দেহ গাড়ি করে নিয়ে সাজান হাতিরঝিলে দুর্ঘটনার নাটক। কিন্তু স্বামীর শেষ রক্ষা হলো না। পুলিশের এই দুর্ঘটনা নাটকে বিশ্বাস না হওয়াই আটক করা হয় স্বামীকে। এর পরেই জানা যায় আসল রহস্য! 

শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিলে এই দুর্ঘটনার ঘটনাটি ঘটে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উঠে গেছে সড়কদ্বীপে। এতে গাড়ি ও গাড়িটির চালকের সামান্য ক্ষতি হলেও এক তরুণী আরোহীকে পুলিশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

রহস্যজনক এই ঘটনায় মৃত ওই তরুণীর স্বামী সাকিবুল আলম (৩৫) ও তার বাড়ির এক গৃহকর্মীকে আটক করে পুলিশ।  

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়িতেই ঝিলিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি কী কারণে, কিভাবে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন এবং দুর্ঘটনার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় সাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তরুণীর স্বামী আরমান আলম সাদিক দাবি করেন, ওই দুর্ঘটনায়ই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃত তরুণীর শরীরে দুর্ঘটনায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি; পাওয়া যায় ভিন্ন ধরনের আঘাতের চিহ্ন। এমন আলামত দেখে সন্দেহ হলে পুলিশ ওই দম্পতির গুলশানের বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করে। সেখানে দেখা যায়, গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের ২২/সি নম্বর বাসা থেকে সকালে চারজন ওই নারীর নিথর দেহ গাড়িতে তোলেন।

শেষে কথা পাল্টে স্বামীর দাবি, অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে! 

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, ওই নারীর পা, মাথা ও গলায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হয়তো শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।  

হাতিরঝিল থানা পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা খবর পান হাতিরঝিল আমবাগান মূল সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি প্রাইভেটকার সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে আছে। এক নারীকে পেছনের সিটে শায়িত অবস্থায় পাওয়া যায়। আর ওই নারীর স্বামী সামান্য আহত হন। তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাকিবুল আলম প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, সকালে গুলশানের ৩৬ নম্বর সড়কের বাসা থেকে বের হলে চাকা ফেটে গাড়ি ফুটপাতে উঠে যায়। এরপর সে (ঝিলিক) মারা যায়। ঝিলিকের শরীরে দুর্ঘটনার আঘাতের চিহ্ন নেই, কিভাবে মারা গেলেন? জানতে চাইলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি কি জানি!’ এরপর তিনি উপস্থিত কারো কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। এ সময় তিনি মিরপুরের এমপি মো. ইলিয়াস মোল্লা তার নানা বলে জানান।

এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ রোধে সারা দেশের যেখানে যা বন্ধ

দেশে প্রবেশ বন্ধ ইউরোপ ও ১২ দেশের নাগরিকের

পরিবারের করোনা উপসর্গে নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে : ওমর সানী

স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি ওজনের শিশুর জন্ম

পরিবার জানিয়েছে, দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে তাদের বিয়ে হয়। তাদের আট মাস বয়সি ছেলে সন্তানও আছে। আর্থিক দিক থেকে দুটি পরিবারের মধ্যে সামঞ্জস্যতা ছিল না। আর্থিক দিক থেকে সচ্ছল হওয়ায় সাদিকের পরিবার ঝিলিকের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইত না। সাদিকের পরিবার বিভিন্ন সময় ঝিলিককে নির্যাতন করত।

ঝিলিকের মা আসমা বেগম জানান, তার স্বামী (ঝিলিকের বাবা) আনোয়ার হোসেন এক বছর আগে মারা গেছেন। তাদের তিন মেয়ে এবং এক ছেলে। তিনি অন্য সন্তানদের নিয়ে মোহাম্মদপুরে থাকেন।

গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। কিভাবে ঝিলিক মারা গেছেন তা যাচাই করা হচ্ছে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

news24bd.tv/আলী