তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন ও পাপ মোচন করেন

আল্লাহ স্বাক্ষী। প্রচুর সুযোগ ছিল। ওজু বা গোসলে কুলি করতে গিয়ে চুপিসারে পানি পান করে নিতে পারতাম। পৃথিবীর কারো দেখার সুযোগও ছিল না। কিন্তু একজন ঠিকই দেখছেন। এই ভয় ও বিশ্বাসটা ছিল বলেই আমরা তৃষ্ণার্ত গলায় এক ফোঁটা পানি ঢুকতে দেইনি। যে আমরা এতটুকু ক্ষুধা-পিপাসা সহ্য করতে পারিনা। সেই আমরাই আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিজেকে অভুক্ত-তৃষ্ণার্ত রেখেছি।  

বিনিময়ে আল্লাহ আমাদেরকে বলছেন-- "যে কেউ রামাদ্বানের রোজা রাখে, ঈমান ও সওয়াবের আশায়, তার বিগত জীবনের সব পাপ মাফ করে দেওয়া হয়" (বুখারী-৩৮)।

ইফতারের পর শরীরটা একদম ছেড়ে দিতো। আর চলতে চাইতো না। কিন্তু আমরা দাঁড়িয়ে যেতাম। দীর্ঘ তারাবীহ পড়তে।   বিনিময়ে আল্লাহ আমাদেরকে বলছেন-- "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও নেকীর আশায় রামাদ্বান মাসে ক্বিয়াম করবে (তারাবীহ পড়বে) তার পূর্বেকার পাপ সমূহ মাফ করে দেয়া হবে" (বুখারী-৩৫; মুসলিম-৭৬০)।

ক্বদরে রাতগুলোতে জেগে ছিলাম। চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যেতো। বাঁধা দেবারও কেউ ছিল না। তারপরও রাত জেগে নিভৃতে গুনাহর জন্য আমরা কেঁদেছি।

বিনিময়ে আল্লাহ আমাদেরকে বলছেন-- “এই রাতে যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে বিশুদ্ধ ঈমান নিয়ে আল্লাহর কাছে সাওয়াব প্রাপ্তির আশায় ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে” (বুখারি: ১০৯১, মুসলিম:৭৬০)।  

নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। নিশ্চয়ই আল্লাহর অঙ্গীকারগুলোকেও বিশ্বাস করি। তাই মনে আর কোন রকমের সন্দেহ নেই। অবশ্যই বিশ্বাস করি। আল্লাহ অবশ্যই আমাদের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।

এটাতো স্বয়ং আমার আল্লাহ তা’আলার দেয়া গ্যারান্টিই যে:- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু (যুমার:৫৩)। আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যিনি গুনাহ মাফ করেন... আমলকারীদের পুরস্কার কতই না উত্তম (ইমরান:১৩৬)। আল্লাহ কখনও তাদেরকে শাস্তি দেবেন না, যতক্ষণ তারা ক্ষমা চাইতে থাকবে (আনফাল:৩৩)। আপনি আমার বান্দাদের জানিয়ে দিন যে, নিশ্চয় আমিই একমাত্র ক্ষমাকারী, দয়ালু (হিজর:৪৯)।  

তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন ও পাপ মোচন করেন (শূরা:২৫)। নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার (মূলক:১২)’।

এরপরেও কি আমরা সন্দেহ করবো। দ্বিধা করবো। আল্লাহ আমাদের তওবা কবুল করবেন না ? আমাদেরকে ক্ষমা করবেন না ? ‘হে আমার পালনকর্তা। ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনিই শ্রেষ্ট রহমকারী। ’ (মূমীনুন:১১৮)

লেখক : আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ।

news24bd.tv/আলী