টিউশনির টাকা না দিলে মামলা করার সুযোগ থাকা উচিত

টিউশনি পেয়েছি এক সপ্তাহ হয়েছে। ছাত্রীকে উচ্চমাধ‍্যমিক রসায়ন পড়ানোর কথা। তিনদিন পড়িয়েছি।

দ্বিতীয় সপ্তাহে দেখি স্টুডেন্ট বায়োলজি বই নিয়ে আসছে। একটু অবাক হলাম। পড়ানোর কথা কেমেস্ট্রি। এখন দেখি বায়োলজিও পড়াতে হবে। না ও করতে পারছি না। শাড়ি কিনলে ব্লাউজের কাপড় ফ্রি—এ ধরণের অফার তো আমি দেইনি।

প্রথমবার পড়িয়ে দিলাম। অন‍্যদিন আবার নিয়ে আসলো। বললাম, দেখো কেমেস্ট্রি বইয়ের মধ‍্যে যদি বায়োলজি বই ঢুকিয়ে স‍্যান্ডউইচ বানাতে চাও, সেটা তোমার ব‍্যাপার। তবে সেই স‍্যান্ডইউচ নিয়ে আমার মোটেও আগ্রহ নেই। এই কথা শুনে, দুই চোখ বড়ো করে সে আমার দিকে উচ্চমাধ‍্যমিক একটা লুক দিলো।

দুই সপ্তাহ পড়ানো হলো। তৃতীয় সপ্তাহে একদিন আমি গিয়ে বসে আসি। স্টুডেন্টের খবর নেই। প্রায় আধঘণ্টা পড় এসে বলে, স‍্যার আসেন। সে ঘুম থেকে উঠে, প্রস্তুত হয়ে হেলে দুলে এসেছে! যথারীতি আমার মেজাজ গরম! মেজাজ গরম নিয়ে তো আর তাপউৎপাদী বিক্রিয়া (Exothermic reaction) পড়ানো যায় না! বললাম, আজকে তোমাকে শুধু তাপহারী বিক্রিয়া পড়াবো। স্টুডেন্ট বলে উঠলো—মানে!

দুদিন পর আবারো দেরি। অন‍্য টিচারের কাছে পড়তে গিয়েছে। সেখান থেকে আসতে আসেত আধঘন্টা দেরি। আর আমি লিভিং রুমে বসে বসে পত্রিকা মুখস্থ করছিলাম। সে সময় স্মার্টফোন ছিলো না। থাকলে হয়তো সঙ্গীত অজ্ঞ মাহফুজ স‍্যারের গান উপভোগ করতে পারতাম।

আমি পরে বাসায় এসে স্টুডেন্টকে ফোন করলাম। বললাম তোমাকে আর পড়াবো না। যার সময়জ্ঞান নেই, তাকে অন‍্যজ্ঞান দেয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই। আমার তিন সপ্তাহের টাকা, চেক বা মানি অর্ডার করে (তখন বিকাশ ছিলো না) পাঠিয়ে দিও। ঠিকানা দিয়ে দিলাম। এও বললাম, যদি টাকা না পাঠাও আমি কিন্তু থানায় যাবো।

আরও পড়ুন:

বাড়ানো হয়েছে লঞ্চ চলাচলের সময়

এবার পর্নোগ্রাফি শুটিংয়ের অভিযোগে অভিনেত্রী গ্রেপ্তার

সাকিবের সামনে রেকর্ড গড়ার হাতছানি, যেখানে তিনিই হবেন প্রথম

চিত্রনায়িকা একার বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় দুই মামলা

টাকা পাঠায়নি। পড়ে আমি থানায় গিয়েছিলাম। থানায় গিয়ে পরিচয় হয় ইউনিভার্সিটির এক বড়ো ভাইয়ের সাথে। বললাম একটা মামলা করবো। টাকা আদায়ের লক্ষ‍্যে। তিনি আমার ঘটনা শুনে অনেক্ষন হাসলেন। বিষয়টা উনার কাছে হাসির হলেও, আমার কাছে মোটেও হাসির ছিলো না। মামলা করতে পারিনি। এ ধরণের মামলা নাকি করা যায় না।

পাওনা টাকা আদায়ের জন‍্য বাংলাদেশ পুলিশ আইনে সুষ্পষ্ট কোন এক্ট আছে কিনা তখন জানা ছিলো না। এখনো জানা নেই।

তবে এই বিষয়ে কঠোর আইন হওয়া উচিত। মামলার সুযোগ থাকা উচিত।

news24bd.tv/ নকিব