যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি

ইসলামে উত্তম চরিত্রের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত আছে। মুমিনদের জন্য বিভিন্ন গুণাবলিতে চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা ঈমানের দাবি। কেননা উত্তম চরিত্র ছাড়া একজন মুমিনের ঈমান পরিপূর্ণ হতে পারে না। ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য উত্তম চরিত্র অর্জন করা অপরিহার্য। এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ওই মুমিন ঈমানে পরিপূর্ণ যার চরিত্র সর্বোত্তম। ’ (সুনানে আবু দাউদ,    হাদিস : ৪৬৮২)

আমাদের সমাজে মানুষের সর্বোত্তম হওয়ার বিভিন্ন মাপকাঠি আছে। বিভিন্নজনের কাছে ভিন্ন মাপকাঠিতে ভিন্ন ধরনের মানুষ সর্বোত্তম। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বোত্তম হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হচ্ছে উত্তম চরিত্র। এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) অশ্লীলভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম যার চরিত্র সর্বোত্তম। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৯)

রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। তিনি কখনো কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। চরিত্রবান মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন। তাই রাসুল (সা.)-এর প্রিয় মানুষদের কাতারে শামিল হতে চাইলে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া আবশ্যক। উত্তম চরিত্রের সর্বোত্তম নমুনা ছিলেন রাসুল (সা.)। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) জন্মগতভাবে বা ইচ্ছাপূর্বক অশ্লীলভাষী ছিলেন না। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩৭৫৯)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব এত বেশি, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কিয়ামতের দিন মানুষের সওয়াব ও গোনাহ পরিমাপের জন্য দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা হবে। সেদিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি ভারী হবে তা হলো উত্তম চরিত্র। এ সম্পর্কে আবু দারদা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের দাঁড়িপাল্লায় উত্তম চরিত্রের চেয়ে বেশি ওজনের আর কোনো জিনিস হবে না। কেননা, আল্লাহ অশ্লীল ও কটুভাষীকে ঘৃণা করেন। ’ (সুনানে তিরমিজি,  হাদিস : ২০০২)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব ওজনে সবচেয়ে বেশি ভারী হওয়ার রহস্য আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়। এক ব্যক্তি সারা দিন সাওম পালন করে ও সারা রাত নফল সালাত পড়ে যেরূপ সওয়াব পায় মহান আল্লাহ উত্তম চরিত্রের বদৌলতে সেরূপ সওয়াব দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার ভালো চরিত্রের মাধ্যমে (দিনে) সাওম পালনকারী ও (রাতে) নামাজ আদায়কারীর মর্যাদা লাভ করতে পারে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯৮)

আরও পড়ুন:

‘তদবির’ করার আগে দেখা করতেই লাগত এক লাখ!

৬৮ বছর পর রাষ্ট্রীয় বিমান এয়ার ইন্ডিয়া আবারও কিনলো টাটা সন্স

বিশ্রামে সতেজ হওয়ার চেষ্টা

উত্তেজিত হয়েই এলোমেলোভাবে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেন সেই মাদরাসা শিক্ষক

জান্নাতে মানুষের আমল অনুযায়ী সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত করা হবে। যার আমল যত ভালো হবে সে তত বেশি সম্মানিত হবে। রাসুল (সা.) নিজে উত্তম চরিত্রবানদের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে ঘর বরাদ্দের জিম্মাদারি নিয়েছেন। এ বিষয়ে আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বে ঝগড়া পরিহার করবে আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের জিম্মাদার। আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের জিম্মাদার। এবং যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের জিম্মাদার। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮০০)