বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের মূল মাজার ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। উদ্বিগ্ন বাউল-ফকিররা দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
১৩১ বছর আগে মরমী সাধক ফকির লালন সাঁই দেহত্যাগ করলে তাকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়িতেই সমাহিত করা হয়। এরপর থেকে তার সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভক্ত-অনুসারীরা। ৫৮ বছর আগে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় এই মাজার। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এই ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে, খসে পড়ছে পলেস্তরা।
মূল মাজারের পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। মূল মাজারের উত্তর ও পূর্বপাশের অংশের পিলারে এ ফাটল দেখা গেছে। কোথাও কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা। এদিকে ফাটলের এ চিত্র দেখা দেওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই তা দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন লালন ভক্ত ও অনুসারীরা।
লালন ভক্ত ও অনুসারীরা বলছে, দেশে করোনা পরিস্থিতি থাকায় লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়িতে প্রায় দুইবছর কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। তাই মূল মাজারের ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়ার চিত্র সামনে আসেনি।
দীর্ঘদিন ধরে হয়নি সংস্কার কাজও। বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই তা দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি। এতে বিষয়টি লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মাজারের খাদেম ফকির মোহাম্মদ আলী শাহ বলেন, যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে এ মাজারটি। প্রায় ১৫দিন আগে কর্মকর্তারা এসে দেখে গেছেন ফাটলের এ চিত্র। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ করার দাবি করছি। এটি শুধু আমার দাবি নয়, পুরো পৃথিবীর লালন ভক্ত ও অনুসারীদের দাবি এটি।
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, লালনের মূল মাজার ভারতের আজমির শরীফ অনুকরণে ১৯৬৩ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাজারের নির্মাণকাজ করা হয়। মরমী সাধক ফকির লালন সাঁইয়েরওেু ১৩১ তম তিরোধান দিবস আজ।
করোনার কারণ দেখিয়ে এবারো বাউল মেলার আয়োজন বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। তবে, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়াবাড়ি খোলা থাকায় জড়ো হয়েছেন সাধু-বাউল-ফকিররা। প্রথা অনুযায়ী তারা ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সাইঁজির চরণে।
আরও পড়ুন:
আমাদের টিকার অভাব হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিউজিল্যান্ডকে মেরে তক্তা বানাতে চেয়েছিল ভারত: শোয়েব
প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু সম্মেলনে যাওয়া স্ববিরোধী: রিজভী
ভারতের সেমিফাইনালে ওঠা হবে অলৌকিক: আফ্রিদি
প্রায় ১২ ওভার কোন বাউন্ডারি ছিল না ভারতের!
এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছে কয়েকদিন আগেই। ফকির লালনের দেহত্যাগের পর ১৩১ বছরে এবার দ্বিতীয় বারের মতো হচ্ছে না অনুষ্ঠান আয়োজন। তারপরও লালন ধামে অবস্থান নিয়েছেন সাধু-ফকির, বাউল-পাগলরা। জাতপাতহীন-মানবতার লালন দর্শন প্রচার হচ্ছে তারই গানে।
নিজস্ব রেওয়াজে ভক্তি-শ্রদ্ধা দিচ্ছেন লালন অনুসারীরা। তবে, অনুষ্ঠান না করার ঘোষণায় মর্মাহত তারা। আখড়াবাড়ির বাইরে লালন একাডেমির মাঠে রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট করেও আছেন অনেক ফকির-বাউল। প্রায় দুশো বছরে আগে এই আখড়াবাড়ি থেকেই মানুষকে সত্য পথে চলার ডাক দিয়েছিলেন মরমী সাধক ফকির লালন সাঁই।
news24bd.tv নাজিম