হন্যে হয়ে খুঁজেও কুড়িগ্রামে ভোটারদের পাচ্ছে না প্রার্থীরা

কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে বেশ কিছু ভোটারকে খুঁজে পাচ্ছেন না প্রার্থীরা। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর ও দুধকুমার নদীর ভাঙনে ভিটেবাড়ী হারিয়ে এসব ভোটার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরায় তাদেরকে খুঁজে পাচ্ছে না প্রার্থীরা। এদিকে ভোটের ক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ততই টেনশন বাড়ছে প্রার্থীদের। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অধিক ভোট পেতে মরিয়া হয়ে এসব ভোটারদের খুঁজছে তারা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু ভোটার জেলার বাইরে রংপুর, লালমনিরহাট ও দিনাজপুরে স্থানান্তরিত হয়েছে। কিন্তু এখনো তারা এই ইউনিয়নের ভোটার হওয়ায় তাদেরকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন মেম্বার প্রার্থীরা। এছাড়াও নদী ভাঙনের ফলে এক ওয়ার্ডের ভোটার ও প্রার্থীরা চলে গেছেন আরেক ওয়ার্ডে। কিন্তু ভোটার রয়ে গেছেন আগের ওয়ার্ডে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী এরশাদুল হক জানান, আমার ৪নং ওয়ার্ডের পার্ব্বতীপুর গ্রাম এখন নদী গর্ভে। আমি নিজেই সেখান থেকে ৫নং ওয়ার্ডে নয়ারী পাড়ায় এসে বসতি গড়েছি। আমার মত অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে। এই ওয়ার্ডে ভোটার ১ হাজার ৪৭৯ জন। এরমধ্যে প্রায় আড়াইশ’ ভোটার ইউনিয়নের বাইরে স্থানান্তরিত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর হোসেন ও বাদশা ২০১৯ সালে জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর দামালগ্রামে বসতি গেড়েছে। শাহজামাল গেছে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর গ্রামে। অপর ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ী জোসনার বাজারে স্বপরিবারে গেছে আমিনরা। চর কুড়িগ্রামে স্থানান্তিরিত হয়েছে ফুলভান বেওয়া। এরা সবাই ২০১৭ সালের বন্যায় ভিটেমাটি হারায়।

এই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী আব্দুল আউয়াল নদী ভাঙনের ফলে চলে গেছেন ৪নং ওয়ার্ডে। তিনি ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন। তিনি জানালেন আমরা ১নং ওয়ার্ডে বলদিপাড়ায় বসবাস করতাম। ২০১৭ সালের বন্যায় আমাদের গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরে আমরা ৪নং ওয়ার্ডে ঘনেশ্যামপুরে চলে আসি। বলদী পাড়ার, ফারাজিপাড়া থেকে প্রায় ২২০জন অন্যত্র চলে গেছে। এই ভোটারদের আমরা খুঁজছি। এদের মধ্যে লালমনিরহাট জেলার তুষভান্ডার, রাজারহাট জেলার দেউলার বিল, নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ও কাফনা, উলিপুরের বেগমগঞ্জ ও ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ী ও সাবেক ছিটমহলে গেছে অনেক পরিবার। ভোটের আগে এদেরকে গ্রামে আনতে না পারলে আমাদের ভীষণ সমস্যা হবে। এজন্য এসব পরিবারের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আমরা যোগাযোগ করছি।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর বাজারের নুরানী মোড় এলাকার ভোটার আবুল হোসেন, কাশেম ও শাহাবুদ্দি জানান, প্রতিবার নদী ভাঙনের ফলে অনেক পরিবার ভাঙনের হাত থেকে রেহাই পেতে উঁচু এলাকায় চলে যায়। পরে এদেরকে খুঁজে প্রার্থীরা নিজ খরচে এলাকায় নিয়ে আসে। তবে এবার ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় গ্রামের যুবক ও তরুণ শ্রেণির লোকজন এখন রাজশাহী, চাপাই, বগুড়া চলে গেছে। ফলে আশপাশের এলাকার ভোটারদের হণ্যে হয়ে খুঁজছেন মেম্বার প্রার্থীরা।

আগামি ২৮ নভেম্বর যাত্রাপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ১৫ হাজার ১১২জন। নদ-নদী বিধৌত এই ইউনিয়নে প্রায় ২৫টির মত চর ও দ্বীপচর রয়েছে।

আরও পড়ুন

সাগর পাড়ে নিয়ে ২৪ বছর বয়সী তরুণীকে রাতভর ধর্ষণ ৩ যুবকের

news24bd.tv এসএম