ছেলের লাশ চাপা দিয়ে নির্বাচনে ব্যস্ত মা-বাবা

দুই বছর আগে আত্মহত্যা করে এক ছেলের বউ। এবার আত্মহত্যা করেন ছেলে। কিন্তু নির্বাচনে সমস্যা হবে চিন্তা করে মা-বাবা ছেলের লাশ উদ্ধার করে 'গোপনে' সেপটিক ট্যাংকে চাপা দেন। এরপর নেমে পড়েন নির্বাচনী প্রচারণায়। মা করুণা বেগম সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচনে লড়ছেন। কিন্তু এতকিছুর পরও শেষ রক্ষা হয়নি। নিহতের বাবা নিজেই বিষয়টি চার দিন পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেন। এরপর শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার এবং নিহতের বাবা ও মাকে আটক করে পুলিশ।

এমন ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায়।  

নিহত করিম (১৮) শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের নরিনা পূর্বপাড়ার আলহাজ হোসেনের ছেলে। নিহতের মা করুণা বেগম চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী পদের প্রার্থী। ছেলের লাশ চাপা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় স্বামীকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

নিহতের মা করুনা বেগম জানান, মেজো ছেলে করিম দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিল। মঙ্গলবার রাতে খাবার খেয়ে করিম তার নিজ ঘরে ঘুমাতে যায়। পরদিন ভোরে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে ছোট ছেলের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে দেখেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এরপর স্বামী-স্ত্রী মিলে ছেলের লাশ নামিয়ে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

সেপটিক ট্যাংকে লাশ রাখার কারণ জানতে চাইলে নিহতের বাবা আলহাজ বলেন, 'প্রায় দুই বছর আগে বড় ছেলের বউ চিঠি লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছিল। ওই ঘটনা সামাল দিতে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। এবার ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি হলে আবারও আইনি ঝামেলা হবে, তাতে আমাদের বর্তমান বসতভিটাও থাকবে না। তাই আমরা বুকে কষ্ট চাপা রেখে ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি গোপন করতেই লাশ মাটিচাপা দিয়েছিলাম। পাশাপাশি বিষয়টি কেউ যেন টের না পায় সে জন্য স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণাও যথারীতি চালাই।

আলহাজ আরো বলেন, ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই শুক্রবার সকালে স্থানীয় গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে গিয়ে ঘটনা প্রকাশ করেছি। এরপর চেয়ারম্যান পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেছে।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিদেশে যেতে হবে খালেদাকে: হানিফ

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়া ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ

সিলেট থেকে বিদেশে পণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা করা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

 

ওসি শাহিদ মাহমুদ খান জানান, নিহতের লাশ উদ্ধারের পর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।  

news24bd.tv/আলী