অসুস্থ বাবার সামনে ছেলেকে ছাত্রলীগ নেতার নির্যাতন, বাবার মৃত্যু

ঝিনাইদহের মহেশপুরে গিয়াস উদ্দিন (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ নিহতের নিজ গ্রাম যাদবপুরে শোকে ছায়া নেমে এসেছে। তিনি যাদবপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নিবেদিত একজন কর্মী ছিলেন।

গভীর শোক প্রকাশ করে মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ জানান, মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনের বুকে ব্যাথা শুরু হলে তাকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তার পরিবার। তার সাথে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী ফাতেমা খাতুন ও ছেলে যাদবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম হুসাইন সরকার।

রাত ১২টার দিকে মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ, ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন ও আমীর হোসেনকে নিয়ে হাসপাতালের কেবিনে প্রবেশ করে। অসুস্থ পিতা ও মায়ের সামনে ছেলে এসএম হুসাইন সরকারের উপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ। তাদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে হুসাইন সরকারকে নিজ পায়ের জুতা খুলে নিজের মুখে মারতে বাধ্য করান ওই ছাত্রলীগ সভাপতি।

সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ আরো জানান, বিষয়টি জানতে পেরে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রানা হামিদকে বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

ভুক্তভোগী এসএম হুসাইন সরকার জানান, বারবার সভাপতির পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছি। অবশেষে উপায় ও নিরাপত্তা না পেয়ে পিতাকে নিয়ে যশোরে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে আমার পিতা ব্রেনস্ট্রোক করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকালে মারা যান তিনি।

রাতের বেলায় হাসপাতালে রোগীর কেবিনে ঢুকে নির্যাতনের ঘটনাটি জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ হাসিবুল সাত্তার জানান, বিষয়টি জানি না। এঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ জানান, হুসাইন সরকার আমাকে নিয়ে ফেসবুকে আজেবাজে মন্তব্য করেছিল। সে কারণে আমি থানায় হুসাইনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে একটি অভিযোগ করি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাচ্ছিলাম না। তাই হাসপাতালে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য আইডি থেকে তুলে নেওয়াসহ তার সাথে আপোষের জন্য গিয়েছিলাম। তার পিতা-মাতার সামনে এটি করা হয়নি এবং যা হয়েছে কেবিনের বাইরে এবং আমি তাকে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখায়নি।

আরও পড়ুন

কোন পাসপোর্টে এত দ্রুত কানাডায় গেলেন ডা. মুরাদ!

news24bd.tv এসএম