রাজধানীতে আটক জঙ্গি ছিলেন র‍্যাম্প মডেল!

জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার একটি বাড়ি থেকে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেহেদী হাসান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। তাঁর কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট, উগ্রবাদী বইসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এই মেহেদী একসময় দেশের প্রথম সারির র‍্যাম্প মডেলদের সঙ্গে মডেলিং করতেন।

র‍্যাবের দাবি, গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’র কমান্ডার। তাঁর সাংগঠনিক নাম ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিল। মেহেদীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর রাজাপুর গ্রামে। বাবার নাম খোরশেদ আলম। তিনি পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি অবসরে যান। মেহেদী ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। ২৯ বছরের এই যুবক ছিলেন  র‍্যাম্প মডেল। তথ্যপ্রযুক্তিতেও বেশ দক্ষতা আছে তার। এছাড়া গৃহসজ্জার জিনিসপত্র বিক্রিসহ নানা ব্যবসা ছিল তাঁর। কিন্তু সব ছেড়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বনানী থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। একই আইনে উত্তরা পশ্চিম থানার আরেকটি মামলার তদন্তে তাঁর নাম এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর র‍্যাবের অভিযানে পালাতে গিয়ে নিহত হন জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের তৎকালীন আমির সারোয়ার জাহান ওরফে মানিক ওরফে আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। এই বাসা থেকে জেএমবির দুটি অপারেশনাল ব্রিগেড ‘বদর স্কোয়াড’ ও ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী’ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ‘বদর ব্রিগেড’ হোলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন হামলায় ভূমিকা রাখে। তবে দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ‘বদর ব্রিগেডের’ বেশির ভাগ সদস্য নিহত ও আটক হয়। এতে ব্রিগেডটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ব্যাকআপ ব্রিগেড হিসেবে ‘আদ্-দার-ই-কুতনী’ সদস্য সংগ্রহ করে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করে।

২০১৫ সালে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে মেহেদী হাসান সম্পৃক্ত হয়। তাঁর সঙ্গে নিবরাসসহ হোলি আর্টিজান ও কল্যাণপুরের আস্তানার জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ।  

তিনি বলেন, মেহেদী দেশে ও দেশের বাইরে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ, অর্থ ও অর্থের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহের কাজ করতেন। নারী সদস্যরাও তাঁর মাধ্যমে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বলে জানা গেছে। মেহেদীর কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত থেকে জানা যায়, ‘আদ্-দার-ই-কুতনী’ অপারেশনাল সক্ষমতা অর্জন ও যেকোনো স্থানে নাশকতার জন্য সক্ষম।