চাহিদা বাড়ার সঙ্গে মেজাজ হারাতেন পল্লবী

গত রোববার (১৫ মে) সকালে কলকাতার টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দে’র ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর একদিন পর সোমবার (১৬ মে) দুপুরে গড়ফা থানায় আসেন তার বাবা, মা ও পারিবারিক আইনজীবী। এ সময় তারা পল্লবী যার সঙ্গে লিভ-ইন করতেন, সেই প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তী ও অভিনেত্রীর এক বান্ধবীর নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

তবে এই তারকার মৃত্যুর রহস্য এখনো উদঘাটন হয়নি। এরমধ্যেই পল্লবী দে’র মৃত্যুর ঘটনায় মাদকযোগের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাকে ঘিরে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।  

জানা গেছে, আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল খরচও। আর তা থেকেই মেজাজ হারাতেন পল্লবী। তাই টাকা রোজগার করতে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যও নিয়েছিলেন। কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টাকা রোজগার করা যায় তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী পল্লবী দে।  

প্রচণ্ড জেদিও ছিলেন পল্লবী। প্রায়ই প্রতিবেশিরা শুনতে পেতেন ভিতর থেকে বাসনের মতো জিনিসপত্র ছোড়াছুড়ির শব্দ। আবার অনেক সময় দেখতেন, রেগে বাড়ির জিনিসপত্র, এমনকী, জুতোও বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতেন।  

এক প্রতিবেশী জানান, ওই সময় ওই ফ্ল্যাটটির সামনে যেতেও ভয় করত তাদের। তখন সাগ্নিককেই মূলত সামলাতে হত। গোলমাল দেখে উপরে উঠে আসতেন কেয়ারটেকারও।

পুলিশ জানিয়েছে, সাগ্নিক ও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সোনার গয়না কিনতে শুরু করেছিলেন পল্লবী। এ ছাড়াও ফ্ল্যাট সাজিয়ে তোলার জন্য আরো নতুন জিনিস কিনতে শুরু করেন। তার উপর নতুন একটি ফ্ল্যাট কেনেন সাগ্নিক। নিউ টাউনে ৮০ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের মধ্যে ৫৭ লাখ টাকা দেন পল্লবী নিজেই।  

তবে জানা গিয়েছে, বাড়ির টাকার ইএমআই বা মাসিক ঋণ শোধ করতেন তিনি। সাগ্নিক যে গাড়ি কেনেন, তার ইএমআইও মেটাতেন পল্লবী। একটি ব্যাঙ্কের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে দুইজনের ১৫ লাখ টাকা ছিল। কিন্তু সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে সাগ্নিক বের করতে চাইতেন না।  

নিজের জন্য প্রচুর সোনার গয়না ও জিনিসপত্র তিনি ইএমআইয়ে কেনেন। একসময় অভিনয় করে বেশ কিছু টাকা হাতে আসে পল্লবীর। পুলিশের কাছে খবর, তার একটি সিরিয়াল শেষের দিকে। কিন্তু নতুন করে কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না পল্লবী। পুলিশের কাছে সাগ্নিকের দাবি, তাই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী। কারণ কীভাবে তিনি বিপুল টাকার ইএমআই শোধ করবেন, তা নিয়েই ভাবতেন তিনি।  

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা পল্লবীর গড়ফার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন। ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হুক্কা, গাঁজাসহ নেশার নানা জিনিসপত্র। একই সঙ্গে এই অভিনেত্রীর ফোন পরীক্ষা করেও নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।

নানারকম তথ্যের কারণে পল্লবীর মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা আরও বাড়ছে। এখন পুলিশের তদন্তের ওপরই নির্ভর করছে সবকিছু।

news24bd.tv/আলী