তারুণ্যের শক্তিকে সংঘবদ্ধ করা রাদওয়ান মুজিবের জন্মদিন আজ

‘তরুণদের সঙ্গে যোগাযোগের পদ্ধতি নিয়ে ভাবতে হবে, সব সেক্টরে আরও বেশি তরুণদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার সময় এসেছে'- গেল বছর কথাগুলো বলেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৈহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। আজ ৪২ বছরে পা রাখছেন তিনি। দেশপ্রেম বুকে ধারণ করে দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের সংঘবদ্ধ করেছেন তিনি ইয়াং বাংলার 'কানেক্টিং দ্য ডট' স্লোগানের মাধ্যমে।

তরুণদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এবং তাদের কর্মক্ষেত্র ও কর্ম পরিসর আরো বাড়াতে সংঘবদ্ধ করার উদ্যোগ হিসেবে সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের পরিকল্পনায় ২০১৪ সাল যাত্রা শুরু করে ইয়াং বাংলা। এরপর তারুণ্যের সর্ববৃহৎ এই প্লাটফর্মের প্রথম উদ্যোগ হিসেবে তরুণ সংগঠকদের প্রদান করা হয় জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের প্রেরণায় তরুণদের উদ্ভাসিত করতে তার হাত ধরেই শুরু হয় জয় বাংলা কনসার্ট।

বর্তমানকে নিয়ে নয়, বরং আগামী দিনের পরিকল্পনা করতে পছন্দ করেন রাদওয়ান মুজিব। বিভিন্ন সময়ে এ কথা বলেছেন রাদওয়ান মুজিব। আর সে কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তার নিরলস চেষ্টা। তিনি মনে করেন, আমাদের ইতিহাসের মাঝেই রয়েছে দেশপ্রেম ও দেশগঠনে উদ্বুদ্ধ হবার প্রেরণা। আর এ কারণে গণমাধ্যম ও নিজের প্রচারণায় নয়, বরং সকল পরিকল্পনা নিয়ে নীরবে কাজ করে গেছেন আগামী প্রজন্মের জন্য।

রাদওয়ান মুজিব স্বল্প ভাষায় যতবারই গণমাধ্যমের সামনে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলেছেন তা থেকে বেশ স্পষ্ট যে তিনি তার নানা বঙ্গবন্ধু, খাল শেখ হাসিনা এবং মা শেখ রেহানার মতই একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অটল ও অঙ্গীকারবদ্ধ।

শিশুদের জাতির পিতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) প্রকাশ করেছে ১০ খণ্ডের গ্রাফিক নভেল 'মুজিব'। এই গ্রাফিক নভেলের মত সৃজনশীল প্রকল্পের পেছনে মূল উদ্যোক্ত হিসেবে ছিলেন এই রাদওয়ান মুজিব। সিআরআই-এর ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের হাত ধরেই এরপর এসেছে 'হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল', 'জয় বাংলা কনসার্ট' ও দেশের প্রথম নীতি-নির্ধারনী বিষয়ক ম্যাগাজিন 'হোয়াইটবোর্ড'।

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেন কোন বিভ্রান্তি তৈরির সুযোগ না থাকে এই লক্ষ্য নিয়েই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এ ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ। তিনি ইতিহাস নয়, বরং অতীতের গল্প মানুষের কাছে পৌছে দিতে বেশি পছন্দ করেন।

'হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল' ডকু ড্রামার নির্মাণ প্রসঙ্গে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিভিশনে দেখি। কিন্তু আমরা আসলে সেটা দেখাতে চেয়েছি যেখানে কোন ক্যামেরা পৌঁছায় না। এর জন্য কোন স্ক্রিপ্ট ছিলো না, তার বৈচিত্রময় জীবনই একটি গল্পের মতো। আমরা শুধু সেটাই দেখাতে চেয়েছি। '

অর্থাৎ কোন নাটকীয়তা নয়, বরং সত্যিকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উঠিয়ে এনেছেন তিনি এই ডকুড্রামার মাধ্যমে।

শিশুদের জন্য শিশুতোষ ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় গ্রাফিক নভেল 'মুজিব'। বিদেশে বিভিন্ন সুপার হিরো এবং ইতিহাসের সত্যিকারের মহানায়কদের কমিক দেখে তার মনেও ইচ্ছা জাগে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এক কমিক তৈরির, যা তথ্যের ভারে নয় বরং গল্পের ছন্দ খুদে পাঠকদের কাছে টানবে। বর্তমানে ১০ খণ্ডের এই গ্রাফিক নভেলটি শিশু কিশোরদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।

উল্লেখ্য ১৯৮০ সালের ২১ মে জন্মগ্রহণ করেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড় রাদওয়ানের। বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে গভর্নেন্স অ্যান্ড হিস্ট্রি বিষয়ে স্নাতক রাদওয়ান একই প্রতিষ্ঠান থেকে কমপ্যারেটিভ পলিটিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ের ট্রাস্টি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেখভাল করেন। সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়ং বাংলার মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও উদ্বুদ্ধ করার কাজে জড়িয়েছেন নিজেকে। এখনো কাজটি করে যাচ্ছেন তিনি নীরবে।

news24bd.tv/আলী