জেল থেকে বেরিয়ে কিশোরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় চাঁদা দাবির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে এক কিশোরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার রাতে চৌমুহনী বাজারে হোসেন মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত মো. আইমন (১৮) চৌমুহনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গণিপুরের নুর নবীর ছেলে। ঘটনার পর অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তারা হলেন, চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হাই মিলনের ছেলে মো. পাভেল(২১), বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. রাকিব (২০) ও আজাদ মিয়ার ছেলে নিরব (২০)।

বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব জানান, নিহত আইমন চৌমুহনী বাজারে প্রধান সড়কের পাশে খোলা জায়গায় জুতা বিক্রি করতেন। তিন মাস আগে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাকিব তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আইমন এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে ইয়াবাসহ রাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিন মাস জেল খেটে গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পায় সে।

জেল থেকে বেরিয়ে শনিবার রাত ৮টার দিকে চৌমুহনী বাজারে রাকিব তার দুই সহযোগী পাভেল ও রিমনকে নিয়ে আইমনের গতিরোধ করে। এ সময় রাকিব তার কারাভোগের জন্য আইমনকে দায়ী করে। এক পর্যায়ে তিনজন মিলে আইমনকে ছুরি দিয়ে জখম করে। বাঁচার জন্যে সে পাশের একটি ফার্মেসিতে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও তারা আইমনের গলার নিচে চুরি দিয়ে জখম করে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে হাতবোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩০ মিনিট চৌমুহনী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আটিয়াবাড়ি পুল এলাকা থেকে পুলিশ অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরাটিও উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ফুটপাতের একজন জুতা দোকানদারের কাছে চাঁদা দাবির পেছনের ঘটনা, চৌমুহনী বাজারে দোকানদারদের কাছে চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায়ের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং কারা এই চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে এই সবগুলো বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আর যাতে এমন ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য তদন্তে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে চতুর্থ আইমন। তার মৃত্যুর খবরে স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন আইমনের বাবা, মা ও বোনেরা।

news24bd.tv/রিমু