তিস্তার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়িঘর। পানি ঢুকেছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায়। রংপুরের তিন উপজেলা এখন পানিতে ভাসছে।
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি।নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে রংপুরের গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম বাগেরহাট এলাকায় পানিতে প্লাবিত হয়েছে পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির ফসল ও রাস্তাঘাট। দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিস্তার পানি প্রায় সাত দিন ধরে বাড়ছে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তিন উপজেলায়। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তিস্তার পানি। নদীর ডান তীরে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিনবিনিয়াচরের পশ্চিমপাড়ায় ডান তীর রক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, বাঁশঝাড়, জমি, বসতবাড়ি।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি জানান, বেড়িবাঁধে ভাঙনের ফলে ভোররাত থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই এলাকায় শতাধিক বাড়িঘর পানির নিচে। রাস্তা ভেঙে গেছে লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের। পানি বৃদ্ধির ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, বেড়িবাঁধটির পূর্বের অংশ এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। এখন খৈখাওয়া অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদি এই ভাঙন রোধ করা না যায়, তাহলে খৈখাওয়া,পাঙ্গাটারি, মধ্যপাড়া, আমিনগঞ্জসহ আশপাশের অন্তত ১১ থেকে ১২টি গ্রামে ভাঙন দেখা দেবে। আউলিয়া বাজার, বিনবিনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। ’
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভাঙনকবলিত কোলকন্দ ইউনিয়নের বিনবিনিয়া চর ও লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতির মুখে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে এসব এলাকার বাসিন্দারা একটু সমস্যায় পড়ছে। তাদেরকে বলা হয়েছে উঁচু স্থানে যাওয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, টেকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, রংপুরের তিন উপজেলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। কাউনিয়া ও পীরগাছার ভাঙনকবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন যাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ভাঙন দেখা দেয়নি। বেড়িবাঁধের বাইরে যদি ভাঙনের খবর পাওয়া যায় সেখানেও জিওব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
news24bd.tv/কামরুল