দীর্ঘ ৪০ বছর কাটিয়েছেন ইসরায়েলের কারাগারে। তিনিই একমাত্র ফিলিস্তিনি নাগরিক যিনি কি না ইসরায়েলের কারাগারে এতো দীর্ঘ সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অবশেষে মুক্তি পেলেন তিনি। বলছিলাম ফিলিস্তিনি নাগরিক করিম ইউনুসের কথা।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে উত্তর তেল আবিবের হাদারিম কারগার থেকে মুক্তি ৬৬ বছর বয়সী করিম।
১৯৮০ সালে গোলান মালভূমিতে বিরোধীদের হামলায় নিহত হন ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্য আভি ব্রুমবার্গ। ওই ঘটনায় ১৯৮৩ সালে করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয় এবং তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
কারাগারে থাকা অবস্থায় একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক হয়ে উঠেন করিম। জেলে থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করতে আহ্বান জানান তিনি।
ফিলিস্তিনের আরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন করিম। তবে সেটি ইসরায়েলের দখলে রয়েছে। এমনকি করিমের ইসরায়েলি নাগরিকত্বও রয়েছে। তবে ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুক্তির পর করিমের সঙ্গে কথা বলে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিকেরা। তখন তিনি জানান, পুলিশের দুটি গাড়ি পরিবর্তন করে তাকে উত্তর তেল আবিবের রান্নানা শহরের একটি বাস স্টপে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে একজনের সাহায্যে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি।
আরা গ্রাম থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক ইমরান খান বলেন, করিমকে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানাতে গ্রামের রাস্তায় ভিড় করেন স্থানীয়রা। ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের অন্যতম ব্যক্তিত্ব তিনি। কারাগারে থেকেই তিনি ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হিসেবে চলে আসেন।
এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘করিমের মুক্তির আগেই তার পরিবারের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে তার পরিবার ও গ্রামবাসীকে কিছু বিধিনিষেধ দিয়ে আসে। তবে করিমের আসার পর সেগুলো উপেক্ষা করছে তারা। ’
৪০ বছর পর মুক্তি পাওয়া করিম বলেন, ‘ভোরের দিকে কারাগারের কয়েকজন কর্মকর্তা আমার সেলে আসেন। তারা আমাকে মুক্তির কথা জানায়। তখন আমি তাদের গোসলের ও তৈরি হওয়ার কথা বলি। তবে তারা আমাকে তা করতে দেয়নি। ’
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তবে করিমের মুক্তিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘করিম ফিলিস্তিনি জনগণ ও বিশ্বের মুক্ত জনগণের অটলতার প্রতীক। ’
ফিলিস্তিনি মানবাধিকার গ্রুপ অ্যাডামিরের মতে, দখলদার ইসরায়েলের কারাগারে ১৫০ শিশুসহ অন্তত ৪ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দী অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে কোনো বিচার ছাড়াই ৮৩৫ বন্দি রয়েছে।
news24bd.tv/মামুন