চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ানে অবিবাহিতদের নর-নারীদের সন্তান ধারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিজেদের ইচ্ছে মতো সন্তান নিতে পারবেন অবিবাহিতরাও। একই আইন প্রযোজ্য হতে যাচ্ছে বিবাহিত দম্পতিদের জন্যও। দেশের নিম্নমুখী জন্মহার বাড়ানোর জন্য সরকারের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চীনের জনসংখ্যা গত ছয় দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার হ্রাস পায়। এরপরই নীতির পরিবর্তন করে জনসংখ্যাগত সংকটে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানে সিচুয়ান সরকার বিবাহিত দম্পতিদের সর্বোচ্চ দুটি সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের অনুমতি দেয় । কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অবিবাহিত বাবা-মাসহ সব নাগরিক কোনো যত খুশি তত সন্তান নিতে পারবেন।
এদিকে সিচুয়ান হেলথ কমিশনের একজন কর্মকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, নীতিটি অবিবাহিতদের বাবা-মা হতে উৎসাহিত করে না, বরং ‘সিঙ্গেল মাদারদের’ অধিকার রক্ষার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। কমিশনের ঘোষণায় বলা হয়েছে, নীতিটি ‘দীর্ঘমেয়াদি এবং সুষম জনসংখ্যার উন্নয়ন’ প্রচার করবে।
এতদিন বিবাহিত দম্পতিরা যেসব সংরক্ষিত সুবিধা পেত, নতুন নিয়মে সিচুয়ানের সিঙ্গেল বাবা-মায়েরাও সেসব সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে মাতৃত্ব বীমা। প্রসবপূর্ব স্বাস্থ্যসেবা, প্রসবসম্পর্কিত চিকিৎসা ব্যয় এবং প্রদত্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি এই বীমার আওয়ায় থাকে।
সিচুয়ান ৮৩ মিলিয়নেরও বেশি লোকের বাসস্থান এবং চীনের পঞ্চম সর্বাধিক জনবহুল প্রদেশ। অন্যান্য প্রদেশ যেমন গুয়াংডং এবং শানসি একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। চীনের জনসংখ্যাগত সংকট আগামী বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি এখন মূল উদ্বেগ।
বেইজিং ২০১৫ সালে কয়েক দশক দীর্ঘ এবং অত্যন্ত বিতর্কিত ‘এক সন্তান’নীতি বাতিল করেছিল। ক্রমহ্রাসমান জন্মহার রোধ করতে দেশটির সরকার ওই বছর ঘোষণা করে, বিবাহিত দম্পতিদের দুটি সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এরপর ২০১৬ সালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও জাতীয় জন্মহার হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। দেশটির অনেক তরুণ-তরুণী দেরিতে বিয়ে করার বা সম্পূর্ণভাবে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
news24bd.tv/সাব্বির