মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে নিষেধাজ্ঞা

সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি)। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা মিয়ানমারের উপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। জ্বালানি কর্মকর্তা এবং জান্তা সদস্যদের উপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন, খনির উদ্যোক্তারা, জ্বালানি কর্মকর্তা এবং বর্তমান ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনও আলাদা ভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চিসহ হাজারো নেতাকর্মীকে।  

তবে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়ে জান্তা সরকার।

প্রতিটি রাজ্যে গড়ে ওঠে আলাদা সশস্ত্র গোষ্ঠী। প্রতিদিনই সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ওই সব সশস্ত্র গোষ্ঠী। এখনও দেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং পাঁচ কোটি চল্লিশ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রবল আক্রমণের শিকার হচ্ছে সামরিক জান্তা।

ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর বিশ্লেষণ করা সর্বসাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু গত অক্টোবর মাসে প্রায় ৫০০টি আক্রমণ বা সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

ইনস্টিটিউটের ডেটা ম্যাপিংয়ে দেখা যায়, লড়াইয়ের বেশিরভাগ অংশ এখনও মিয়ানমারের শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে কেন্দ্রীভূত, যা উত্তর ও পশ্চিমে মধ্য মান্দালয় অঞ্চল থেকে ম্যাগওয়ে এবং সাগাইং পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া, দক্ষিণ কাচিন এবং উত্তর শান রাজ্যে, মিয়ানমারের উত্তর-পূর্ব এলাকা এবং থাইল্যান্ডের সাথে দেশটির পূর্ব সীমান্ত বরাবর অঞ্চলকে তুমুল লড়াইয়ের ক্ষেত্র বলে দেখা যায়।

বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বিশ্লেষকরা আশা করছেন যে, এদিকে চলতি বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে। তবে জান্তার অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অবাধ হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সংবিধান অনুসারে, আগামী আগষ্টের মধ্যেই নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও, তা চলতি বছরের শেষের দিকে হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে জান্তার বিরোধীরা বলছে, এই সরকারের অধীনে যে কোনো নির্বাচনে কারচুপি হবেই এবং শুধু নামমাত্র একটি বেসামরিক সরকার গঠিত হবে।

মিয়ানমারের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির বিশ্লেষক অং থু নিয়েন বলেছেন, নির্বাচন অনেক সম্ভাব্য লক্ষ্য উপস্থাপন করবে, তাই আমি মনে করি, আমরা বরং একটি সহিংস নির্বাচনী বছর দেখতে পাব।

news24bd.tv/হারুন