‘২০৭১ সালের মধ্যে দেশকে ভূমিকম্প সহনশীল করা সম্ভব’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদ

‘২০৭১ সালের মধ্যে দেশকে ভূমিকম্প সহনশীল করা সম্ভব’

অনলাইন ডেস্ক

ভবন মালিকের ক্যাপাসিটির সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তাই ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রথম এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেই। ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষকেই প্রধান দায়িত্ব পালন করতে হবে। ২০১০ সালের প্রস্তাবিত বিল্ডিং কোড ১৩ বছর পর পাশ হয়েছে ২০২২ সালে। ইতোমধ্যে প্রযুক্তিগত আরও বেশ উৎকর্ষ ঘটেছে।

কাজেই বর্তমান বিল্ডিং কোডও সময়পোযোগী নয়, এটিও আধুনিকীকরণ আবশ্যক। তবে ২০৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনশীল করা সম্ভব হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) এক ছায়া সংসদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, এমপি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা ও দুর্নীতি নিরসনে এখন থেকে তা অনলাইনে আবেদন এবং অনুমোদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ের সবগুলো ভবন ভূমিকম্প সহনশীল নয়। কেবল ভবন নির্মাণের মধ্যেই ভূমিকম্প ঝুঁকি সীমাবদ্ধ নয়। সরকার যে রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, এলিভেটর এক্সপ্রেস নির্মাণসহ গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন তৈরি করছে তাও ভূমিকম্প সহনশীল হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে এমন শীর্ষ ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ, অপ্রশস্ত সড়ক, সচেতনতার অভাব, পূর্ব প্রস্তুতির ঘাটতি ঢাকা শহরকে ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে পতিত করেছে। ঢাকা শহরে অপরিকল্পিতভাবে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন নেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্প হলে তা অগ্নিকূপে পরিণত হতে পারে। ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে মাটি গলে পানিতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় ১০ দফা সুপারিশ প্রদান করেন।

সুপারিশগুলো  হলো-

১) ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি ভবন, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে এগুলোকে ভূমিকম্প সহনীয় করা।  

২) বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রণালয় এর নেতৃত্বে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করা।

৩) ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প সহশীলতা নির্দেশিকা মানতে বাধ্য করা।

৪) ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট সব উপকরণ পরীক্ষার জন্য রিসার্স, ট্রেনিং ও টেস্টিং ল্যাবরটরি স্থাপণ নিশ্চিত করা।

৫) প্রতি তিন মাস পরপর ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাসমূহের সমন্বয় ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা এবং মহড়া নিশ্চিত করা।

৬) ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত তথ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষর্থীদের অবহিত করা।

৭) ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করণে সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভার সক্ষমতা বাড়ানো।  

৮) ভবন নির্মাণে নকশার ব্যত্যয় রোধে ভবনের অনুমোদিত নকশা অনলাইনে দেওয়া।

৯) প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক উপজেলায় প্রয়োজনীয় জনবলসহ ১টি করে ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা।  

১০) বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা।

ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার অপেক্ষা ভবন মালিকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষক বিষয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজকে পরাজিত করে সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মহম্মদ রইস, ড. দিলারা জাহিদ, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও সাংবাদিক মো. হাবিবুর রহমান রাহী।

news24bd.tv/তৌহিদ