মন্দির ভাংচুর মামলায় চেয়ারম্যান সহ ১৩ জনের কারাদণ্ড 

মন্দির ভাংচুর মামলায় চেয়ারম্যান সহ ১৩ জনের কারাদণ্ড 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দির ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের একটি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিসহ ১৩ জন আসামির চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ পারভেজ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন বলে জানিয়েছেন আদালত পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম।

কারা দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের কামারগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. মোখলেছ মিয়া, একই গ্রামের ইদু মিয়া, নাসিরনগর পশ্চিমপাড়ার মো. মফিজুল হক, একই এলাকার নাজির রহমান, মো. মাফুজ মিয়া, সায়হাম রাব্বি শ্যাম, মীর কাশেম, তাবারক রেজা, আনন্দপুর গ্রামের আনিস মিয়া, কুন্ডা ইউনিয়নের মছলন্দপুর গ্রামের খসরু মিয়া, নাসিরনগর সদরের ঘোষপাড়ার শেখ মো. আব্দুল আহাদ এবং আশুরাইল বেনীপাড়ার সজিব চৌধুরী। এদের মধ্যে পাঁচজন আসামি পলাতক রয়েছেন।

বাকি আটজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর জানান, নাসিরনগর উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকার পুরাতন দুর্গামন্দিরে অগ্নিসংযোগের মামলায় ১৩ জনকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাদণ্ডের পাশাপশি প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে জারিমানা করা হয়েছে। নাসিরনগর থানায় কর্মরত তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

 

আদালত ও নাসিরনগর থানা সূত্র জানায়, নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের বাসিন্দা জেলে পরিবারের রসরাজ দাসের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে একটি পোস্ট দেয়ার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর উপজেলা সদরের হিন্দু অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতিকারীরা।  

এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় আটটি মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্তের পর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

তবে মামলার রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন বলেন, যে কোনো মামলার সাজা দিতে গেলে নূন্যতম সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রয়োজন। কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণহীন এই মামলায় ১৩ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনঙ্গণে এই ফরমায়েশি রায় এটিই প্রথম। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে আমরা ন্যায় বিচার পাব বলে আশা করছি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর নাজমুল হোসেন বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ বিচার বিশ্লেষণ করেই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি অনুকরণীয় রায় হয়ে থাকবে।

news24bd.tv/কেআই