৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারদের আর কত অপেক্ষা?

সংগৃহীত ছবি

৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারদের আর কত অপেক্ষা?

অনলাইন ডেস্ক

গত বছরের মার্চের শেষ দিকে ৪০তম বিসিএসের ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এরপর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। নন–ক্যাডারের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। ক্যাডার পদের চাকরিপ্রার্থীরা গত বছরের নভেম্বরে যোগ দিলেও নানা জটিলতায় এখনো নন–ক্যাডারদের নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেনি পিএসসি।

এখন নন–ক্যাডার প্রার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরির জন্য আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে তাঁদের? অপেক্ষা করতে করতে চূড়ান্ত হতাশ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডার চাকরিপ্রার্থীরা।

পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডারের তালিকায় আছেন উত্তীর্ণ ৮ হাজার ১৬৬ জন চাকরিপ্রার্থী। ৪০তম বিসিএসের ক্যাডার নিয়োগের সুপারিশের পরপর নন–ক্যাডারদের বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশের তালিকা প্রদানের কথা পিএসসির। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নন–ক্যাডারদের নিয়োগের সুপারিশের কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

পিএসসি বলছে, নন–ক্যাডার নিয়োগের বিদ্যমান বিধি সংশোধনে সময় লাগছে তাই এখনো ৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডারদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

জানতে চাইলে পিএসসির নন–ক্যাডার শাখার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ৪০তম বিসিএসের ক্যাডার নিয়োগের পর নন–ক্যাডার নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে কাজ করার সময় এতে বিধি সংশোধনের জটিলতা দেখা দেয়। বিদ্যমান বিধিতে পিএসসি নিয়োগ দিতে বিধি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। পরে বিদ্যমান বিধি সংশোধনের প্রস্তাব গত বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি। এটি পরে গত বছরের শেষ দিকে সচিব কমিটিতে পাস হয়। এরপর তা মতামতের জন্য পিএসসিতে আসে। সেটি দেখে মতামত প্রদান করে পিএসসি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।  

সবশেষ গত এক মাসের বেশি সময় আগে বিধি সংশোধনের চূড়ান্ত চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এখন সেখানেই বিধিটি আছে বলে জানা গেছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন হলে দ্রুত সময়েই পিএসসি নন–ক্যাডারদের নিয়োগ করতে পারবে। এ–সংক্রান্ত সব প্রস্তুতিও পিএসসি নিয়ে রেখেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

নন–ক্যাডারদের দ্রুত নিয়োগের অনুরোধ জানিয়ে ৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডার তালিকায় থাকা দুজন চাকরিপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে আমরা চাকরির অপেক্ষায়। আমাদের সঙ্গে থাকা ক্যাডারের কর্মকর্তারা চাকরি করছেন অথচ এখনো আমরা চাকরির সুপারিশই পাইনি।  

আমাদের অনেকে বেকার। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পরিচিত ব্যক্তিরা যখন চাকরির বিষয়ে জানতে চান আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আমাদের বিধি সংশোধন করে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হোক। আমাদের সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। এখন অনেকে হতাশায় দিন পার করেছেন। এই অবস্থার অবসান চাই আমরা। ’

এদিকে পিএসসি জানিয়েছে, ৪০তম বিসিএসে নন–ক্যাডারদের নিয়োগ দিতে তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কাছে প্রায় সাড়ে চার হাজার শূন্য পদের তালিকা পেয়েছে। সেটিও ঝুলে আছে বিধি সংশোধনের অপেক্ষায়। যেহেতু বিধি সংশোধিত হয়নি তাই তারাও কিছু করতে পারছে না।

এই বিসিএস পরীক্ষা করোনা মহামারির কারণে বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পিএসসিকে ভাইভা পরীক্ষা নিতেও বেগ পোহাতে হয়েছে। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকবার স্থগিত করে আবার শুরু করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এই বিসিএস করোনার কারণে পিছিয়ে পড়ে।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে ১০ হাজার ৯৬৪ জন পাস করেন। ২০১৮ সালের আগস্টে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ প্রার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ৩ লাখ ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ জন।