ডাক-হরকরা কিংবা নব্বই দশকের পাহারাদার নয়, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেখা মিললো হারিকেনের। বিদ্যুতের এ যুগে হারিকেনের দেখা মেলা সত্যিই ভার। তবে হারিয়ে যাওয়া এই জিনিস নিয়েই চলছে রাজনীতি- এমনটাই মত সাধারণ মানুষের।
হারিকেন নিয়ে রাজনীতির সূত্রপাত বিএনপির অফিসিয়াল পেজ থেকে।
সোমবার হারিকেনের ছবি সম্বলিত বিএনপির এক পোস্টে লেখা হয় 'হারিকেন নিজেও ভাবেনি এই শতভাগ বিদ্যুতের যুগে সে আবার তার ভরা যৌবন ফিরে পাবে!' পোস্টটি মূলত সারাদেশে চলমান সাম্প্রতিক লোডশেডিংকে ইঙ্গিত করে দেয়া হয়েছে। কারণ, দেশজুড়ে লোডশেডিং এর মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দিনের বেশিরভাগ সময়েই লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের অবস্থা কাহিল। শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে।এদিকে, বিএনপির এই পোস্টের পরপরই আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজে দেখা গেছে সংশ্লিষ্ট আরেক পোস্ট। সেখানে বিএনপির পেজের ছবির স্ক্রিনশট দিয়ে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- 'হারিকেনের আলোতেই নিজেদের হারানো যৌবন ফিরে পেলো বিএনপি। কারণ, এই হারিকেনের আলোতেই কেটে গেছে তাদের ৫ টি বছর। ' এই ক্যাপশনের মাধ্যমে বিএনপি সময়কালীন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বিএনপির সময়ে দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে দাবি দলটির।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে চলমান দাবদাহের মাঝে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সেইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, তীব্র গরম এবং সেই সাথে লোডশেডিংয়ের কারণে সবার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের জন্য তিনি করোনা মহামারির ধাক্কা, পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার বিষয়গুলোকে দায়ী করছেন।
অন্যদিকে, কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধের বিষয়টিও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। যার ফলে প্রতিদিন ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হারাবে জাতীয় গ্রিড। গত ২৫ মে বন্ধ হয়ে যায় এই কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি। অপর ইউনিটটি গতকাল সোমবার বন্ধ হয়ে গেছে। যার প্রতিটি ইউনিট থেকে পাওয়া যেতো ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তবে শিগগিরই কয়লা আমদানি করে কেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে ফিরবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।