পঙ্গপাল খেয়ে ফেলছে আফগানিস্তানের হাজার হাজার একর ফসল

পঙ্গপাল খেয়ে ফেলছে আফগানিস্তানের হাজার হাজার একর ফসল

অনলাইন ডেস্ক

পঙ্গপালের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আফগানিস্তানের মানুষ। ইতিমধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলের একটার পর একটা ফসলের ক্ষেত খেয়ে ফেলছে প্রণীটি। এভাবে এরই মধ্যে সাবাড় করে ফেলেছে হাজার হাজার একর ক্ষেত। এর ফলে দারিদ্রপীড়িত দেশটিতে খাদ্য ঘাটতি চরম রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের যে অঞ্চল ‘রুটির ঝুড়ি’ বলে পরিচিত সেই উত্তরাঞ্চলের অন্তত ৮টি প্রদেশ এরই মধ্যে পঙ্গপালে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বলখ প্রদেশও রয়েছে।

এমনিতেই এই অঞ্চলে পানির অভাব। এর মধ্যেও কষ্ট করে গম চাষ করেছিলেন কৃষকরা।

কিন্তু সব আশা নিরাশায় পর্যবসিত হয়েছে। ধূসর রঙের একপ্রকার পোকায় পুরো অঞ্চল ছেয়ে গেছে।

কোনো এলাকায় ফসল খেয়ে ফেলার পরই পঙ্গপাল সেই এলাকায় ডিম পাড়ে। পরবর্তী বসন্তে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এভাবে একটি চক্রের আকারে পঙ্গপালের দল বারবার ফিরে আসে।

আফগানিস্তান ইতোমধ্যেই দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে। প্রতি ১০টা পরিবারের ৯টি পরিবারেই খাবার সংকট। এর মধ্যে এভাবে ফসল নষ্ট হলে খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ হতে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে ও ছবিতে কৃষকদের পঙ্গপাল আটকানোর মরিয়া চেষ্টা ফুটে উঠেছে। বলখের কান্দলি গ্রামের এক জনপ্রতিনিধি বাজ মোহাম্মদ বলেছেন, শুধু গমই নয়, পঙ্গপালে সব ধরনের শস্যই খেয়ে ফেলছে। এতে সমস্ত প্রদেশেই কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আফগানিস্তানে হানা দেয়া এই পঙ্গপালকে ‘মরক্কান লোকাস্ট’ বলে চিহ্ণিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ধূসর রঙের ফড়িংয়ের মতো পোকাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে সর্বভূক পোকাগুলোর অন্যতম। এই পঙ্গপাল ঠেকাতে কৃষকদের অনেকে বড় জাল ব্যবহার করছেন। এভাবে ধরে ধরে মাটিতে পুঁতে ফেলছেন।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে কখনই পঙ্গপালদের রোখা সম্ভব নয়। কারণ তাদের মৃত্যুর তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হারে বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় জালই ভরসা।

আফগানিস্তানে এবার নিয়ে টানা তৃতীয় বছর খরা চলছে। গত মার্চ থেকে সেখানে বেশিরভাগ প্রদেশেই কোনও বৃষ্টিপাত হয়নি। এক কৃষকের আক্ষেপ, অন্তত বৃষ্টি হলে পঙ্গপালের উপদ্রব কমত। কিন্তু সেই উপায়ও নেই।

আফগানিস্তানে পঙ্গপালের হানায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয় সংস্থা এফএও। সংস্থাটির মতে, পঙ্গপালের আক্রমণের কারণে এ বছর দেশটিতে ১২ লাখ টন গম কম উৎপাদন হতে পারে। যার ফলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে ৪৮ কোটি ডলার।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক