ভোটের দুই দিন আগে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে রাস্তায় ইট বিছানো শুরু করছিলেন, কিন্তু ভোটে হেরে যাওয়ার তিন দিনের মাথায় সেই রাস্তার ইট তুলে অন্য একটি সড়কের জন্য নিয়ে গেছেন ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর অনুুসারী। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের কুতুবপুর ভিয়াইলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
গত সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জামানত হারান আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইউসুফ আলী ভূঁইয়া। এতে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া বেশ ক্ষুব্ধ হন।
এ বিষয়ে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ওই প্রকল্পের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিয়া ভুলক্রমে এক সড়কের ইট অন্য সড়কে নিয়ে গেছেন। এতে গ্রামবাসীর সঙ্গে হাবিবুল্লাহর ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চারটি ইউপিতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর গ্রামীণ অবকাঠামো সড়ক সংস্কারের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য গত ২০ জুন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর গ্রাম কুতুবপুরে ছয়টি টিআর প্রকল্প দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কের পাশেই স্তূপাকার করে রাখা ইট নেওয়া ছাড়াও সড়কে বিছানো ইট শ্রমিক দিয়ে তুলে নেওয়া শুরু করলে স্থানীয় ব্যক্তিদের বাধায় তারা চলে যান।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আনুমানিক ৪০ ফুট জায়গাজুড়ে ইট বিছানো হয়েছে। এ থেকে ১০ ফুট জায়গার ইট সড়ক থেকে তুলে নেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। সড়কের আশপাশে স্তূপাকার করে রাখা ইট দেখা যায়নি।
উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কুতুবপুর ভিয়াইলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদের শুক্রবার সকালে ওই ঘটনাস্থল থেকে প্রথম আলোকে বলেন, ভোটের দুই দিন আগে ওই সড়কে ইট বিছানোর কাজ শুরু হয়। ওই সময় গ্রামবাসীর সহানুভূতি ও ভোটের আশায় দুই ট্রাক ইট-বালু ফেলা হয়। কিন্তু ভোটে পরাজিত হয়ে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ওই সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর নির্দেশে হাবিবুল্লাহ মিয়া তিন ট্রাক ইট সেখান থেকে তুলে নিয়ে অন্য একটি সড়ক নির্মাণের কাজে নিয়ে যান।
ওই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, সজীব ও নুরুল ইসলাম বলেন, সড়কের পাশে স্তূপাকার করে রাখা তিন ট্রাক ইট নিয়ে যাওয়ার পর শ্রমিকেরা বিছানো ইট তুলতে থাকেন। এ সময় গ্রামবাসী বাধা দিলে তাঁরা চলে যান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি (নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী) সদ্য বিজয়ী বড়চওনা ইউপির চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সড়কের ইট নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পিআইওকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে। পুরো কাজ সমাপ্ত করা ছাড়া কোনোক্রমেই বিল দেওয়া হবে না।
News24bd.tv/AA