২৩ দিন পর বাংলাবান্ধায় আসল ভারতের পাথর

২৩ দিন পর বাংলাবান্ধায় আসল ভারতের পাথর

বন্ধ ভুটানের পাথর আমদানি

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

টানা তিন সপ্তাহ পর চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভারত থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) থেকে পাথর আমদানির তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন স্থলবন্দরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত আলী মিয়া।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্দরে ভারতের পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পাথর আসায় কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরছে বন্দরে।

আজ ৯ ট্রাক পাথর বন্দরে প্রবেশ করেছে। আগামী শনিবার থেকে পুরোদমে ভারত থেকে পাথর আসার কথা রয়েছে। আমদানিকারকরা পাথর আমদানির সকল প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে ভুটানের পাথর আমদানি এখনো বন্ধ রয়েছে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন বলেন, শুল্ক কর বৃদ্ধির কারণে এ মাসের ১ তারিখ থেকে ব্যবসায়ীরা লোকসান হওয়ার ভয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছিল। শুল্ক বিভাগের সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। সে ভিত্তিতেই আমদানিককারকরা পাথর আমদানি করতে শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার কিছু পণ্যবাহী (পাথর) ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। পাথর আসার মধ্য দিয়ে আবার সেই প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরতে পারে।

এর আগে পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছিল, ৩১ জুলাই শুল্ক বিভাগ ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে প্রতি মেট্রিক টন ভারতীয় পাথরে (বোল্ডার) অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ১২ ডলার থেকে ১৩ ডলার করার কথা জানায়। আর ভুটানের পাথরে (ভাঙা পাথর) প্রতি মেট্রিক টনে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ২১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২৪ ডলার করা হয়েছে। এ রেটে পাথর আমদানি করলে লোকসানে পড়তে হবে ভেবে তারা ১ আগস্ট থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছিল।

এতে ভারত থেকে টানা ২৩ দিন ও ভুটান থেকে দেড় মাসেরও বেশি সময় বন্দরটিতে পাথর আসা বন্ধ ছিল। ফলে অচল হয়ে পড়ে চারদেশীয় স্থলবন্দরটি।

বন্দরটিতে ৯৫ শতাংশ পাথর নির্ভর হওয়ায় ভারত ও ভুটান থেকে প্রতিদিন ৩৫০-৪৫০ ট্রাকে পাথর আমদানি হতো। সেখানে পাথর না আসায় কর্মচাঞ্চল্য হারিয়ে ফেলে বন্দরটি। কর্মহীনতায় পড়ে হাজার হাজার শ্রমিক। পাথরের ট্রাক বিহীন শুন্য হয়ে পড়ে স্থলবন্দরের ইয়ার্ড। ইমিগ্রেশনে যাত্রীপারাপারও চলছে ধীরগতিতেই। বিপাকে পড়েছে বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থ বছরে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। অর্থ বছরের জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় জুনে আদায় বেশি হয়েছে ১২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

তবে পাথর আমদানি ছাড়া ভারত ও নেপাল থেকে মেশিনারিজ, প্লাস্টিক দানা, ভুট্টা, অয়েল কেক (খৈল), আদা, গম, চাল, ফল ইত্যাদি ও নেপাল ও ভুটান থেকে উৎপাদিত ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। একইভাবে দেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্ট সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, পার্টস, কটনব্যাগ, ওষুধ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন দ্রব্য রপ্তানি চলমান রয়েছে।

news24bd.tvতৌহিদ