ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদন বলছে, দেশের বাজারে আলুর উচ্চমূল্যের পেছনে হিমাগার মালিকদের কারসাজি রয়েছে। বেশি মুনাফার আশায় এজেন্টের (ফড়িয়া) মাধ্যমে কৌশলে আলুর দাম বাড়িয়ে ফায়দা লুটছেন তাঁরা। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।
বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে সম্প্রতি হিমাগার পর্যায়ে বেচাকেনার বিষয়টি তদারক করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ১৮ দফা সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে সরকারি এই অধিদপ্তর। প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আলু উৎপাদনপ্রবণ অঞ্চল বগুড়া, রংপুর ও নীলফামারী সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেন।
এতে তাঁরা জানতে পারেন, আলুর উৎপাদন ও সংরক্ষণে চলতি বছর প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ব্যয় ১৮ থেকে ২০ টাকা, যা হিমাগার পর্যায়ে ২২ টাকা হলেও ফঁড়িয়াদের লাভ থাকে। কিন্তু বর্তমানে হিমাগার থেকেই ৪০ টাকায় আলু বিক্রি করা হয়, যা খুচরায় ৫৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিমাগার মালিকদের প্রভাবে কৃষকরা বরাদ্দ করা কৃষিঋণ পাচ্ছেন না। উৎপাদন মৌসুমে তাঁরা কৃষকদের নামে বরাদ্দ কৃষিঋণ অনৈতিকভাবে ব্যাংক থেকে তুলে তাঁদের নিয়োগ করা এজেন্টদের দিচ্ছেন। এজেন্টরা ওই অর্থ দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে আলু কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এতে কারসাজির পথ তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে অ্যাপ ব্যবহার চালু, হিমাগারে পাকা রসিদ দেওয়াসহ ১৮ সুপারিশ করেছে ভোক্তা অধিকার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশে আলুর চাহিদা ৮০ লাখ টন। চলতি বছর উত্পন্ন হয়েছে এক কোটি ১১ লাখ টন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দুই লাখ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আলু আমদানি শুরু হয়। গত বুধবার পর্যন্ত ১৫ হাজার টন আলু আমদানি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ আলু রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বিহার থেকে আলু আসছে।
বাজারে আলুর সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৭০ টাকা। সরকার এর আগে হিমাগারে ২৭ টাকা দর নির্ধারণ করে দেয়। তবে আলু আমদানির ফলে বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
news24bd.tv/আইএএম