চা পানে কীভাবে মানুষের মৃত্যুহার কমিয়েছিলো ব্রিটিশরা

প্রতীকী ছবি

চা পানে কীভাবে মানুষের মৃত্যুহার কমিয়েছিলো ব্রিটিশরা

অনলাইন ডেস্ক

উপমহাদেশে চা পান করা এখন একটি নিয়মিত ব্যাপার। কিন্তু এই চা উপমহাদেশে কারা এনেছিলো তা নিয়ে বেশি আলোচনা করার দরকার পড়ে না। অনেকেই বলে দিতে পারবেন যে ব্রিটিশদের হাত ধরে অবিভক্ত ভারতবর্ষে চা পানের সূত্রপাত হয়।

পানি ফুটিয়ে চা পাতা ও চিনি দিয়ে তৈরি করা  এই পানীয়টিতে কেউ কেউ দুধ মিশিয়ে খেত।

প্রথমে চা পানের এই অভ্যাসকে ইংরেজ বা ব্রিটিশদের বিলাসিতা মনে করা হলেও ধীরে ধীরে পানীয়টির প্রচলন হয়ে ওঠে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে।

কিন্তু চা পান করে কিভাবে ব্রিটেনের মানুষ তাদের মৃত্যুহার কমিয়েছিলো সেই বিষয়টি নিয়েই গবেষণা করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ফ্রান্সিসকা অ্যান্টম্যান বোল্ডার।

তিনি এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু গবেষণাপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন। পাশাপাশি অনেক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বেশকিছু সিদ্ধান্তে এসেছেন।

তার মতে ১৭ শতকের দিকে ব্রিটেনে রীতিমতো চা পানের হিড়িক পড়েছিলো। যা অনেক মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলো। চা পাতার কোনো অসাধারণ কার্যকর ঔষধিগুণ ছিলো না, যা মানুষের মৃত্যুহার ঠেকিয়েছিলো বরং সাধারণ পানি ফুটিয়ে পান করার কৌশলটি রপ্ত করতে শিখেছিলো বহু মানুষ। সে সময় পান করার পানিতে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু থাকতো যা অকালেই বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে থাকে।

ব্রিটেনের ১৭৬১ থেকে ১৮৩৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই পানি ফুটিয়ে পান করা অভ্যাসের কারণে পূর্বের তুলনায় প্রতি ১০০০ জন মানুষের মধ্যে ২৫-২৮ জন কম মানুষ মারা যাচ্ছিলো। যদিও সে সময়কার মানুষের আয় বা জীবনধারণের মানে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু এখানে চায়ের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও পানি ফুটিয়ে পান করার সুফল পেয়েছিলো ব্রিটেনের তৎকালীন মানুষেরা। পানি ফোটানোর পর এর মধ্যে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু আমাশয় এবং ডায়রিয়ার মতো পানিবাহিত রোগ সৃষ্টি করছিলো। যাকে 'ফ্লাক্স' বা 'ব্লাডি ফ্লাক্স' বলা হতো।

অ্যান্টম্যান আরও জানিয়েছেন, মানুষ কর্মসূত্রে শহরে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সুপেয় পানি সংকট দেখা দিতে থাকে। এতে করে মানুষ বিকল্প পানির উৎস খুঁজতে থাকে। কিন্তু চা পান করা যখন থেকেই সর্বস্তরের মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তখন থেকে মানুষ পানি ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার সহজ কৌশলটিও নিজেদের আয়ত্তে এনে ফেলে (সূত্র:  বিবিসি)

news24bd.tv/SC