যখন চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে

যখন চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে

যখন চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে

চট্টগ্রাম নগরে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে গ্যাস সরবরাহ। শুক্রবার সকাল থেকে লাইনে গ্যাস না পাওয়ায় বাড়ি ও রেস্তোরাঁয় রান্না হয়নি খাবার। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরের লক্ষাধিক মানুষ। এ বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামীকাল শনিবার (২০ জানুযারি) সরবরাহ পুনরায় চালু হতে পারে।

এদিকে নগরীতে বৈদ্যুতিক চুলা ও লাকড়ি জ্বালিয়ে যেসব রেস্তোরাঁ রান্নার কাজ সেরেছে সেখানে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন, মুহূর্তে শেষ হয়ে গেছে সব খাবার। গ্রহকদের অভিযোগ, গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেনি। ফলে প্রস্তুতি না থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাড়ে হয়েছে।

এদিকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরের ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাস মিলছে না।

এ কারণে সড়কে কমে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এ নিয়ে ভোগান্তি ছিল তুলনামূলক কম।

মুরাদপুরের মক্কা হোটেলের কর্মচারী কামাল আহম্মেদ বলেন, প্রতি শুক্রবার আমাদের রেস্টুরেন্টে মানুষের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু আজ সকাল থেকে গ্যাস না থাকায় ক্রেতা আসলেও দেওয়া যায়নি খাবার। আমাদের মালিকপক্ষ আজ বোধহয় ক্ষতির মুখোমুখি হবে।

হোটেল মালিক সমিতির নেতা জামাল উদ্দিন বলেন, অনেকদিন ধরেই গ্যাস সংকট চলছে। যার কারণে কমে গেছে অনেক ব্যবসা বাণিজ্য। আমরা বিকল্পভাবে লাকড়ির চুলা ব্যবহার করছি। তারপরও পূরণ করা যাচ্ছে না ক্রেতাদের চাহিদা। ফলে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন না খেয়ে। আশাকরছি কর্তৃপক্ষ জোড়াল পদক্ষেপ নিবে। নগরের আন্দরকিল্লা, লাভলেন, কাজীর দেউরি, আসকার দিঘীরপাড়, হিলভিউ, এনায়েতবাজার, ওয়াসা, দুই নম্বর গেট, হামজারবাগ, মুরাদপুর, রৌফাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা বলেন, হোটেলে গিয়েও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে তাঁদের কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে মাটির চুলা ব্যবহার করছেন। কেউ সিলিন্ডার কিনেছেন।

গ্যাস সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান।  

তিনি বলেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়। আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গত ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এটি গতকাল বৃহস্পতিবার চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চালু করা যায়নি। এ ছাড়া পেছনের গতি বা ব্যাক প্রেশার না থাকার কারণে সামিট এলএনজি টার্মিনালটিও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। এ কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

আমিনুর রহমান আরও বলেন, আজ সারা দিন গ্যাস না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সামিটের টার্মিনালটি খালি করা হচ্ছিল। এটিও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যাওয়ার কথা আছে। সব মিলিয়ে কখন পরিস্থিতি ভালো হবে বলা যাচ্ছে না।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিপনন উত্তর বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুন্ডু বিকেলে বলেন, কিছুক্ষণ আগে পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মিটিং শেষ করলাম। আশাকরি আগামীকাল শনিবার (২০ জানুয়ারি) গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হতে পারে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে কেজিডিসিএলের গ্রাহক সংযোগ ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি। এর মধ্যে গৃহস্থালি সংযোগ ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি, বাকিগুলো শিল্প-বাণিজ্যসহ অন্য খাতে। এসব খাতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৮০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ১ নভেম্বর থেকে কমবেশি ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম পাওয়া যাচ্ছিল। এ কারণে সব ধরনের গ্রাহকই বিপাকে পড়েন।

news24bd.tv/aa