ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ১২৭ বছর বয়সী যোগী ঢাকায়!

১২৭ বছর বয়সী স্বামী শিবানন্দ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে উপস্থিত হয়েছিলেন

ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ১২৭ বছর বয়সী যোগী ঢাকায়!

অনলাইন ডেস্ক

যোগ সাধনায় বিশেষ অবদানের জন্য ভারতে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত স্বামী শিবানন্দ ঢাকায় এসেছেন। তার আগমন উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণতম এই যোগী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জনসম্মুখে আসেন।

তার আগমন উপলক্ষে ভারত, বাংলাদেশে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তরা সকাল থেকে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে থাকেন।

তিনি ভক্তদের নিকট শিবানন্দ বাবা হিসাবে ব্যাপক পরিচিত।  তাকে আর্ত-পীড়িত, অসহায়, বঞ্চিত এবং অবহেলিত মানুষদের প্রিয় বন্ধু হিসাবে ধরা হয়। তিনি গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসেন। শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসে তিনি মূল মন্দিরে প্রবেশ করে প্রণাম করেন।
এরপর মন্দির প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী এবং ভক্তদের জন্য স্বামী শিবানন্দের দর্শন উন্মুক্ত করা হয়। উপচে পড়া দর্শনার্থীরা এই সময় তাকে শ্রদ্ধা জানান। তিনিও এই সময় তার ভক্তদের আশীর্বাদ করেন।  

স্বামী শিবানন্দের আগমন উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দির কর্তৃপক্ষ দুপুর ১টায় উপস্থিত শতো শতো ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভক্তদের সাথে কুশল বিনিময় শেষে তিনি আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতে ফিরে যাবেন।  

উল্লেখ্য, যোগ সাধনায় বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী পান স্বামী শিবানন্দ। ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ২০২২ সালে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করেন। (সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া)

সিলেটের হবিগঞ্জ (তৎকালীন ভারতবর্ষ) জেলার বাহুবল উপজেলার হরিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করা করা স্বামী শিবানন্দকে উপমহাদেশের যোগশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ হিসাবে ধরা হয়। কঠোর নিয়ম এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজের ছোটবেলা থেকেই যোগের অনুশীলন ও যোগশাস্ত্রে পাণ্ডিত্য দেখিয়েছেন স্বামী শিবানন্দ।  যোগসাধনার পাশাপাশি নিঃস্বার্থ মানবসেবামূলক কাজেও নিজেকে সবসময় জড়িয়ে রাখেন এই যোগী।  

পাসপোর্ট থেকে শুরু করে আধার কার্ড, সবখানেই তার জন্মতারিখ দেওয়া ৮ আগস্ট, ১৮৯৬। তিনি ভোর ৩টায় শয্যা ত্যাগ করেন এবং রাত ৯টার মধ্যে ঘুমাতে যান। সম্পূর্ণ নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন তিনি। স্বামী শিবানন্দের বোন একসময় না খেতে পেরে মারা যান। মাত্র ছয় বছর বয়সে নিজের মা-বাবাকে হারান তিনি। ৭ দিনের ব্যবধানে মা-বাবা হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়লেও পরবর্তীতে আজীবন বিয়ে না করে ব্রহ্মচর্য পালন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্বামী ওঙ্কারানন্দের সাথে মা-বাবার শ্রাদ্ধ শেষ করে তিনি নবদ্বীপ যান। এরপর বহু বিদেশি অনুরাগীর আমন্ত্রণে তিনি ইংল্যান্ড, গ্রিস, স্পেন, অস্ট্রিয়া, ইতালি, হাঙ্গেরি, রাশিয়াসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশে সফর করেছেন।   

news24bd.tv/সুদীপ