আরব সাগরে নৌ-মহড়ার নেপথ্য কারণ !

মাসুদ রানা

আরব সাগরে নৌ-মহড়ার নেপথ্য কারণ !

মাসুদ রানা

১২ই মার্চ থেকে আগামী ১৫ই মার্চ, ওমানের উপসাগরের চাহ্ বাহার বন্দরকে ভিত্তি করে আরবসাগরে চার দিনের নৌযুদ্ধের অনুশীলন করবে আসন্ন প্রত্যক্ষিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ত্রিমিত্র-শক্তিঃ রাশিয়া, চীন ও ইরান। আর, প্রত্যক্ষণার্থী হিসেবে যে-দেশগুলোর অংশ নেবে, সেগুলো হচ্ছে আজারবাইজান, ভারত, কাজাখস্তান, ওমান, পাকিস্তান ও সাউথ আফ্রিকা। ঘটনাটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি এ্যামেরিকার নেতৃত্বাধীন ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশ, মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েল ও দূরপ্রাচ্যের জাপানের সমন্বয়ে গঠিত শক্তির বিরুদ্ধে একটি মহড়া।


প্রত্যক্ষণার্থী হিসেবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভারতের অংশগ্রহণ আগ্রহোদ্দীপক। সরকারীভাবে যদিও ভারত অর্থনৈতিক ও সামারিক ক্ষেত্রে রাশিয়া-বান্ধব, কিন্তু বিশ্ব-কুরুক্ষেত্রে দেশটির শেষ অবস্থান কোথায় স্থির হবে, তা নিশ্চিত বলা মুশকিল। রাষ্ট্রীয় ও সরকারীভাবে ভারত হচ্ছে দুই নৌকার সোয়ারী, যে রাশিয়ার সাথে যেমন ব্রিক্সে (BRICS) আছে, তেমনি এ্যামেরিকার সাথে কুয়াডেও (Quad) আছে। কুয়াড হচ্ছে সামরিক চতুষ্টয় – এ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ইণ্ডিয়া – যা রাশিয়ার মিত্র চীনের বিরুদ্ধে চারশক্তির ঐক্য।

বস্তুতঃ রাশিয়া বা এ্যামেরিকা, কেউ ভারতকে নিশ্চিদ্রভাবে বিশ্বাস করে না এবং নির্ভরযোগ্য মিত্রও মনে করে না, যদিও উভয়ই ভালোবাসার ভান করে নিজের দিকে রাখতে চায় ভারতকে। আমি জানি না আসন্ন-প্রত্যক্ষিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূ-রাজনৈতিক ভাবনা, কৌশল ও কর্মসূচি কী। আমি মনে করি বাংলাদেশের উচিত সঠিক আন্তর্জাতিক কূটনীতির মাধ্যমে স্বদেশ ও স্বজাতির নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভাবা ও ক্রিয়া করা। মনে রাখতে হবে, বিশ্বের ভূরাজনীতিতে জাতি ও রাষ্ট্রেরসমূহের পারস্পরিক প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতা একটি মাত্র উদ্দেশ্যের দ্বারা নির্ধারিত হয়, এবং তা হচ্ছে স্বদেশ ও স্বজাতির স্বার্থ, যেখানে পূর্ব-নির্ধারিত কোনো আদর্শ কিংবা বিশ্বাস নেই এবং চিরস্থায়ী কোনো শত্রু-মিত্রও নেই।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বর্তমানে যুক্তরাজ্য বসবাস করছেন।

news24bd.tv/ডিডি