সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য: সিআইডি প্রধান

সংগৃহীত ছবি

সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য: সিআইডি প্রধান

অনলাইন ডেস্ক

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেছেন, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের ফলে মানুষ দৈনন্দিন সব কাজই কোনো না কোনোভাবে তথ্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। এতে করে মানুষ যেমন সুবিধা ভোগ করছে তেমনি কিছু ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। দুষ্কৃতকারীরা এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের  সাইবার অপরাধ করছে। আর এই সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরে স্টুডেন্ট এনগেজমেন্ট টু কমব্যাট সাইবার ক্রাইম শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ওই সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তারাই হবে জাতির কর্ণধার ও দেশগড়ার কারিগর।

সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যারেজমেন্ট, আনইথিক্যাল কন্টেন্ট, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র‌্যানসমওয়্যার ইত্যাদি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামীতে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসাবে কাজ করবে।

সিআইডি প্রধান বলেন, তরুন প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল এওয়ারনেস বিল্ডআপের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ নিবারণে সক্রিয় হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরা এই প্রশিক্ষণের পর থেকে সিআইডির এম্বেসেডর হিসেবে সাইবার অপরাধ নিবারণ এবং সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য সিআইডিকে অবহিত করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,  ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এবং গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে মোট ২৫৪ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে সাইবার পুলিশ সেন্টারের কার্যক্রম নিয়ে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন, সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশনস এর অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সাইবার অপরাধের ধরণ, করণীয়, প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সামছুল হক তার আলোচনার মাধ্যমে ডিজিটাল ফরেনসিক এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

ওই সেমিনারে মডারেটর হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. খান সরফরাজ আলী। তিনি তার বক্তব্যে সাইবার অপরাধ বিষয়ক তার গবেষণাকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।

সেমিনারের প্রশ্ন-উত্তর এবং উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে আগত তরুণ শিক্ষার্থীরা প্রাণবন্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

ওই সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা সাইবার অপরাধ সম্পর্কে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করেন এবং তাদের মতামত প্রকাশ করেন। সেমিনার শেষে প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদেরকে সনদ প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীরা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব সমূহ পরিদর্শন করেন। ওই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনি বক্তব্য দেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) তানভির হায়দার চৌধুরী।

সেমিনার শেষে সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন বিষয়ে সতর্কতাসহ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। যেমন- সফ্টওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট রাখা, অ্যান্টি-ভাইরাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার, সোস্যাল মিডিয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ সব জায়গায় শক্তিশালি পাসওয়ার্ড ব্যবহার, অনলাইন বা সোস্যাল মিডিয়ায় আপনার সেনসিটিভ তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকা, কখনোই স্প্যাম ইমেইলের অ্যাটাচমেন্ট না খোলা, পাবলিক নেটওয়ার্ক (ফ্রি ওয়াইফাই) ব্যবহার থেকে বিরত থাকা, অপরিচত কাউকে পিন কোড/পাসওয়ার্ড শেয়ার না করা, স্প্যাম মেইলের কোনো লিঙ্ক ও অবিশ্বস্ত কোনো ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক না করা ইত্যাদি।

news24bd.tv/DHL