পাকিস্তান আর বাংলাদেশে কি কোনো পার্থক্য আছে?

পাকিস্তান আর বাংলাদেশে কি কোনো পার্থক্য আছে?

অনলাইন ডেস্ক

দেশে-বিদেশে যেকোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে সব সময়ই সরব থাকেন ভারতে নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এবার বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

সোমবার নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি

পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-
‘বিজয় দিবস নিয়ে প্রতিবছরের মতো আদিখ্যেতা শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশে। ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ তারা পেয়েছে।

মরি মরি!

যে দেশে মেয়েদের সমানাধিকার পাওয়ার স্বাধীনতা নেই, যে দেশে দরিদ্রের দারিদ্র মোচনের স্বাধীনতা নেই, সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা পাওয়ার স্বাধীনতা নেই, যে দেশে বাক স্বাধীনতা নেই, ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, ইসলামের সমালোচনা করার স্বাধীনতা নেই, সরকারের ভুলকে ভুল বলার স্বাধীনতা নেই, সে দেশ আবার কেমন স্বাধীন?

পতাকা উড়িয়ে আর বাঁধা কিছু বুলি কপচিয়ে ব্যর্থতাগুলো ঢেকে রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর। পাকিস্তান আর বাংলাদেশে সত্যিই কি কোনো পার্থক্য আছে? ও দেশের মুক্তচিন্তকরা নির্বাসনে, এ দেশেরও। ওদেশে ইসলামতন্ত্র গণতন্ত্রের চেয়েও জনপ্রিয়। ‍এ দেশেও।

মসজিদ মাদ্রাসা, টুপি দাড়ি বোরখা হিজাবে, অজ্ঞতায়, অন্ধতায় ছেয়ে গেছে দেশ।

পাকিস্তানের সংগে হয়তো এইটুকুই পার্থক্য, ওখানকার লোকগুলো লম্বা লম্বা আর ফর্সা ফর্সা। এখানকারগুলো কালো আর বেঁটে।

আজও দেশটিতে কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, কে বিপক্ষে ছিল তা হিসেব করা হয়। ৪৮ বছর ধরে তাই হচ্ছে। কারও কারও মতে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, সুতরাং সব ভালো।

অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো বলে কি দরিদ্রের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো? পাটকল শ্রমিকেরা তো মরছে।

এক শ্রেণির হাতে চিরকালই টাকা, এক শ্রেণি চিরকালই আনন্দে আহ্লাদে জীবন যাপন করে, এক শ্রেণি যে সরকারই আসুক, সে সরকাররই ঘরের লোক বনে যায়। স্বাধীনতা শব্দটির অর্থ অনেক বড়।

অর্থ না বুঝে শুধু স্বাধীনতা স্বাধীনতা বলে চেঁচালেই মানুষ স্বাধীন হয় না। দেশ ভর্তি ধর্মের, বৈষম্যের, পুঁজিবাদের, স্বৈরতন্ত্রের শেকলে বন্দি পরাধীন মানুষেরা আজ সারাদিন স্বাধীনতার গান গাইছে। গানগুলো বড় বেসুরো। ’

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর