চাপ প্রয়োগ না করে আমাদের সময় দিন : ইভ্যালি এমডি

চাপ প্রয়োগ না করে আমাদের সময় দিন : ইভ্যালি এমডি

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ইভ্যালি প্রসঙ্গ এখনো ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে দেশের গণমাধ্যমেও বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার জবাব দিতে ছয় মাস সময় চেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মার্চেন্টদের কাছে দায়ের তথ্য দিতে ইভ্যালিকে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।

 

আজ বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।

তিন সপ্তাহ সময়ের বিভাজন করা হয়েছে আবার তিনভাবে। যেমন, ক্রেতাদের কাছে ইভ্যালির দায় কত, তা জানাতে হবে সাত দিনের মধ্যে; মার্চেন্টদের কাছে দায় কত, তা জানাতে হবে তিন সপ্তাহের মধ্যে; আর সম্পদ ও দায় কত আছে, তা জানাতে হবে তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের থেকে এই সময় পাওয়ার পর বুধবার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ইভ্যালি অফার, হেল্প ও রিভিউ গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দেন গ্রুপটির এ্যাডমিন ও  ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেল।

 

সেখানে তিনি বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা জানিয়ে লিখেন,আপনারা জানেন আপনাদের বর্তমান অর্ডারগুলো শুধু ডেলিভারির পর আমরা টাকা পাই। অর্থাৎ আপনার টাকার নিরাপত্তা এখন দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু অধিকাংশ পণ্য অগ্রিম টাকা দিয়ে আমাদের কিনতে হয়, ফলে বিনিয়োগ এর বিশাল একটা অংশ আমাদের বর্তমান বিজনেস পরিচালনায় ব্যবহার হচ্ছে।  

নিম্নে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের স্ট্যাটাসটি তুলে ধরে হলো...

আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন, বানিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের ৩ সপ্তাহ দিবেন তথ্য সরবরাহের জন্য।   বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা।  

news24bd.tv

আপনারা জানেন আপনাদের বর্তমান অর্ডারগুলো শুধু ডেলিভারির পর আমরা টাকা পাই। অর্থাৎ আপনার টাকার নিরাপত্তা এখন দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু অধিকাংশ পণ্য অগ্রিম টাকা দিয়ে আমাদের কিনতে হয়, ফলে বিনিয়োগ এর বিশাল একটা অংশ আমাদের বর্তমান বিজনেস পরিচালনায় ব্যবহার হচ্ছে।  

আমাদের পূর্বের অর্ডারগুলো ডেলিভারি চলমান রয়েছে। এই ডেলিভারি দ্রুততর করার জন্য কিন্ত বিনিয়োগ ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

যাদের অর্ডার পেন্ডিং তাদের মানসিক অবস্থা অবশ্যই আমাদের বোধগম্য। কিন্ত একটি বিষয় আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার অর্ডার অথবা রিফান্ড কিছুটা বিলম্ব হলেও আপনি অবশ্যই সেটি পেয়ে যাবেন।  

অনেকে উদ্বিগ্ন থাকার দরুন আমাদের অফিসে এসে অথবা বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে দ্রুত ডেলিভারি বা রিফান্ড এর পরিকল্পনা করছেন। সত্যিকার অর্থে এই আমরা যে বিজনেস করেছি সেখানে আমাদের মেইন এসেট হলো আমাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু। ফলে চাপ প্রয়োগে আমাদের বিজনেস বন্ধ হলে এসেট সেল করে আপনাদের সকল অর্ডার ডেলিভারির কোন সম্ভাবনা নাই। বরং আমরা বিজনেস চালিয়ে যেতে পারলে আপনাদের সকল অর্ডার ডেলিভারি করতে পারব। আমরা সেজন্য বিগত মাসে সর্বোচ্চ ৬ মাস সময় চেয়েছি। আপনারা জানেন আমরা রেগুলারলি পুরাতন অর্ডার ডেলিভারি করে যাচ্ছি। আমরা গত ৪০ দিনে  ২.৫০ লাখ এর অধিক অর্ডার ডেলিভারি করেছি। আমরা ইক্যাব কে কাস্টমারদের ডিটেইলস সহ সাবমিট করেছি। সুতরাং আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ আপনারা একটু সময় দিন। চাপ প্রয়োগ আপনার অর্ডার দ্রুততর দেওয়ার কোন সুযোগ আমাদের নাই।

আপনারা এটাও জানেন আমরা এখন সম্পূর্ণ নীতিমালা মেনে বিজনেস করছি। সুতরাং কোন ইকমার্সে সাথে তুলনা করে ডেলিভারি টাইম লাইন না দেখার অনুরোধ রইল।  

আমরা শতভাগ আশাবাদী আপনারা একটি শক্তিশালী ইভ্যালি অবশ্যই দেখতে পাবেন। আমরা ৬ মাস বলেছি সর্বোচ্চ সময় বিবেচনা করে। ইভ্যালির ভেল্কি পজিটিভলি যেকোন সময় দেখতে পারবেন। আপনারা ২.৫ বছর ধরে আমাদের সাথে আছেন। আমরা ইনশাল্লাহ খুব শীঘ্রই আপনাদের ডেলিভারির পাশাপাশি বিভিন্ন সুখবর দিতে থাকব।

প্রসঙ্গত,ইভ্যালির সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে উঠে আসে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন:

যতক্ষণ না পুলিশ আসবে, মিডিয়া আসবে লাইভ চলবে: পরীমনি

আবারও মুখোমুখি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা

একসঙ্গে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম


 

ইভ্যালির ওপর করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুলাই অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের ৪ প্রতিষ্ঠানকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

news24bd.tv/আলী