‘স্মার্ট নথি’ বাস্তবায়ন করবে সরকার: পলক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার ডিজিটাল নথির উন্নত সংস্করণ ‘স্মার্ট নথি’ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।  তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যবস্থায় আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স, বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস, ব্লক চেইনসহ অন্যান্য ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তি ডিজিটাল নথির সঙ্গে যুক্ত করার প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। সরকারি কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অডিটোরিয়ামে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ডি-নথি বাস্তবায়ন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে ক্যাশলেস সোসাইটি ও পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে ধাপে ধাপে পেপারলেস করা হবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন ক্যাশবিহীন করার পরামর্শ দেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, গত ছয় বছরে সরকারের ১১ হাজার দপ্তরে এক লাখেরও বেশি কর্মকর্তা দুই কোটির বেশি ফাইল ই-নথির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছেন। ডিজিটাল মাধ্যমে সরকারি সেবা দেওয়ায় অর্থ ও সময় উভয়ই সাশ্রয় হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৩ লাখ শিক্ষার্থী স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। এদের কেউ কেউ শিক্ষক, গবেষক, উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা হবে। এদের উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ানো ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে স্মার্ট ক্যাম্পাস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলমান বিভিন্ন সমস্যার প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। গ্রিন, ক্লিন ও সেইফ ক্যাম্পাসের জন্য শিগগির একটি ফান্ডও গঠন করা হবে।  গবেষণা ও উদ্ভাবনে নতুন সম্ভাবনা তৈরির লক্ষ্যে দেশের ৫৭টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পণ করছি। ডিজিটাল নথি বাস্তবায়ন করা গেলে ফাইলের স্তূপ কমবে, সেবা প্রত্যাশীরা স্মার্ট সেবা পাবেন এবং ভোগান্তি কমে যাবে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নথি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

এতে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান এবং ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মনির উল্লাহর সঞ্চালনায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ও শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা এবং ইউজিসি, এটুআই ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।