গত মার্চে নতুন করে গঠিত হয়েছিল উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কুয়েতের সরকার। তবে দেড় মাস না যেতেই ফের ভেঙে গেলো সেই সরকার। কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল আল আহমেদ আল সাবাহ সোমবার এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
কুয়েতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কুনার বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সোমবারের ডিক্রিতে ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী এই ডিক্রি জারি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সামনের নির্বাচনের পর দেশে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সম্ভব হবে এবং কুয়েতের সরকারব্যবস্থা একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে। ’
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কুয়েতের আয়তন মাত্র ১৭ হাজার ৮১৪ বর্গকিলোমিটার। দেশটির জনসংখ্যা ৪২ লাখের কিছু বেশি। ১৯৬২ সালে দেশটিতে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হয়। কুয়েতের পার্লামেন্টে মোট আসন সংখ্যা ৭৬টি। এসব আসনের মধ্যে ৫০টি নির্বাচিত এমপিদের জন্য, বাকি ১৬টি আসনের এমপিরা নিয়োগ পান আমিরের সুপারিশে।
২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেশটির পার্লামেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় নির্বাহী বিভাগ তথা আমিরের। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের অংশগ্রহণের পরিধি আরও বিস্তৃত করতে চান পার্লামেন্ট সদস্যরা, তা থেকেই সূত্রপাত এই দ্বন্দ্বের।
সরকার-পার্লামেন্ট দ্বন্দ্ব এড়াতে কুয়েতের আমির বা শাসনতান্ত্রিক প্রধান শেখ নাওয়াফ আল আহমেদ আল-সাবাহ ২০২১ সালে নিজের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ মেশাল আল আহমেদ আল-সাবাহকে দেশের ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করে রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত অধিকাংশ দায়িত্ব তার ওপর অর্পণ করেন। তবে তা সত্ত্বেও পার্লামেন্ট ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সম্পর্কে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে ২০২২ সালে কুয়েতের স্পিকার মারজুক আল ঘানিম পার্লামেন্টের বিলুপ্তি ঘোষণা করেন। সেপ্টেম্বরে সেখানে একটি জাতীয় নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে অবস্থান নেওয়া এমপিরা। তবে কুয়েতের সাংবিধানিক আদালত সেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পূর্বের পার্লামেন্টই বহাল রাখে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র কুয়েত তার প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের মতোই খনিজ তেলসমৃদ্ধ। কুয়েতের মুদ্রা দিনার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রাগুলোর একটি। তবে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থার কারণে গত কয়েক বছর ধরে দেশটির অর্থনীতিতে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
news24bd.tv/SHS