পিরোজপুরের শুঁটকির কদর বাড়ছে

কঁচা নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৎস বন্দর হচ্ছে পাড়েরহাট। আর এই বন্দরের কাছেই গড়ে উঠছে মাছ শুকানোর স্থান, যা ‘শুঁটকি পল্লী’ নামে পরিচিত।  

পিরোজপুরের চিথলিয়া ও পাড়েরহাট গ্রামে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। শুঁটকির মৌসুমে বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে এনে রোদে শুকানোর পর প্রক্রিয়াজাত করে বানানো হচ্ছে শুঁটকি। এসব শুঁটকির গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখতে শ্রমিকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে মৎস্য বিভাগ। তবে পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে শুঁটকি তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।   পিরোজপুরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির নাম বাদুরা। এই কেন্দ্র থেকে খানিকটা দূরে এই কচাঁ নদী। নদীর পাড়েই গড়ে উঠেছে ‘শুঁটকি পল্লী’। এখানে গেল এক দশক ধরে কার্তিক মাস থেকে শুরু হয়ে একটানা সাড়ে ৪ মাস চলে শুঁটকির ব্যবসা। পাওয়া যায় ফাইস্যা, লইট্যা, ট্যাংরা, চিতলসহ প্রায় ৩৬ রকমের শুঁটকি। আর এখান থেকেই বিভিন্ন প্রকারের শুঁটকি মাছ ঢাকা, সৈয়দপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয় পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য। তবে পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে চাহিদা অনুযায়ী মাছ কিনতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এজন্য সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বলেন, ‘লইট্টা-ট্যাংরাসহ এখানে প্রায় ৩০-৩৫ ধরনের মাছের শুঁটকি করা হয়। এগুলো পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও পুঁজি বাড়লে হলে আরও বেশি পরিমাণে শুঁটকি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তাতে মুনাফার পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। ’

পাড়েরহাট বন্দরের শুঁটকি ব্যবসায়ী আব্দুল হাই কাজী জানান, ‘এসব শুঁটকি বিভিন্ন দামে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়, যা থেকে তারা ভালো মুনাফা পান। তবে এই ব্যবসার সম্প্রসারণ ও ব্যাপক বাজার তৈরি করতে সরকারিভাবে সহযোগিতা দাবি করেছেন এলাকার অন্যান্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা। ’

পিরোজপুরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। শুঁটকিতে যেন কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা না হয়, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। সদরের চিথলিয়া ও ইন্দুরকানি উপজেলায় গড়ে ওঠা ‘শুঁটকি পল্লী’ থেকে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার শুঁটকি তৈরি হয়। ’

ইমন▐ অরিন▐ NEWS24