শৈলকুপায় তীব্র যানজটে নাকাল এলাকাবাসী, নিরসনে নেই কোনো উদ্যোগ

ঝিনাইদহের শৈলকুপা দিনে দিনে যানজটের শহরে পরিণত হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়ছেন পৌর শহরের পথচারী ও অসহায় মানুষ। এক সময়ের জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান এ সমস্যা নিরসনে শহরে ট্রাফিক পুলিশিং কার্যক্রম চালু করেন। তবে শরের বিভিন্ন পয়েন্টে তিন বছর ধরে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও যানজট নিরসনে তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা না থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

শৈলকুপা শহরের একমাত্র গেটওয়ে কবিরপুর মোড়। এই মোড়ের পাশে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, সরকারি গোডাউনসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও হরেক রকমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া চৌরাস্তার মোড়, হাজী মার্কেট মোড় ও ব্রিজ রোডের কদমতলা মোড়ে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। বিশেষ করে শনিবার ও মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে যানজট লেগেই থাকে। এরপরও ঠিক মতো দেখা মেলে না ট্রাফিক পুলিশের।  

অভিযোগ আছে নিজেদের ইচ্ছে মতো ডিউটি করেন ট্রাফিক সার্জেন্টরা। খেয়াল খুশি মতো কিছু কিছু মোটরসাইকেল ধরে জরিমানা করে সারাদিনের মতো হারিয়ে যান। বিভিন্ন মোড়ে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলা আর যত্রতত্র বাস, ট্রাক রাখার বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের যেন কোনো উদ্যোগ নেই। পাশাপাশি শহর জুড়ে ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা আর সিএনজি অটোরিকশা, নসিমন, করিমনের ছড়াছড়ি থাকলেও এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না ট্রাফিক পুলিশের। এতে করেই বাড়ছে যানজট, বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি।  

পথচারী পৌর এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, শৈলকুপার বিভিন্ন পয়েন্টে সব সময় যানজট লেগে থাকে। যানজটের সময় ট্রাফিক পুলিশের দেখা মেলে না। ট্রাফিক পুলিশ যদি সচেতন হয় তাহলে এই যানজট নিরসন সম্ভব।

অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার রবিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আমাদের বাইরে যেতে হয়, কিন্তু কবিরপুর মোড়ে এমন যানজটের সৃষ্টি হয় তাতে আমাদের রোগী নিয়ে যেতে দুর্ভোগ বেড়ে যায়। সঠিকভাবে ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নিলে অনেকাংশে দুর্ভোগ কমে আসবে বলে আশা তার।

শৈলকুপার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট বিলাল হোসেন বলেন, এখানে আমরা দুজন দায়িত্বে আছি, যার জন্য অনেক সময় যানজট দেখা দিতে পারে। এদিকে, শৈলকুপা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ট্রাফিক পুলিশের জনবল সংকট রয়েছে, যার কারণে যানজট নিরসন পুরোপুরি সম্ভব না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলামের ভাষ্য, যানজট জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়, তাই যানজট কমিয়ে আনার ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। তবে যানজটের ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এম হাকিম আহাম্মেদ বলেন, শৈলকুপার কবিরপুর মোড় ও চৌরাস্তা মোড়ে বেশি যানজট দেখা যায়। যানজটের বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি, আমাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তবে চৌরাস্তা মোড়ে সার্বক্ষণিক একজন ট্রাফিক পুলিশ দরকার।

news24bd.tv/SHS