রোজায় যা করবেন, যা করবেন না

স্বাভাবিক খাবার যা খাবেন ► অন্যান্য মাসের মতো এই রমজানে সবজি ও ফল খেতে হবে নিয়মমতোই। না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে নিত্যসঙ্গী। ► এই গরমে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি না খেলে হজমের সমস্যা হয়। ইফতারের পর থেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পানি পান করবেন একটু পরপর। ► খাদ্যতালিকায় সব গ্রুপের খাবার থাকতে হবে—আমিষ, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন, দুধ, দই, মিনারেলস, ফাইবার ইত্যাদি খেতে হবে নিয়মমতো। সুষম খাবার খেতে হবে। ► ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন—লাল আটা, বাদাম, বিনস, শস্য, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। এগুলো হজম হয় আস্তে আস্তে, তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। রক্তে চিনির পরিমাণ তাড়াতাড়ি বাড়ে না।

সুষম খাবার ► দুধ খেতে পারেন প্রতিদিন। কাঁচা ছোলা খাওয়া ভালো। তবে তেল দিয়ে ভুনা করে খাওয়া বাদ দিতে পারেন। ► চা, কফির মাত্রা কম হতে হবে। তা না হলে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

বর্জন করুন ভাজাপোড়া ► ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি—এসব খাবার সম্ভব হলে বাদ দিন। ► ওজন কমাতে চাইলে শর্করা কম খান, আমিষ ও সবজি দিয়ে পেট ভরালে ভালো। ► মাংস বেশি না খেয়ে মাছ খান। ► সহজপাচ্য খাবার, ঠাণ্ডা খাবার যেমন—দই, চিঁড়া খান। তা হলে সারা দিন রোজা রাখা নাজুক পাকস্থলী খাবার হজম করতে পারবে। ► কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যায় না ভুগতে চাইলে ইসবগুল খেতে পারেন দুধ বা জুসের সঙ্গে। ► শরীর খুব বেশি দুর্বল লাগলে ইফতারের পর ডাবের পানি বা খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। ► কোমল পানীয় বর্জন করুন। এটা ঘুমের সমস্যা, এসিডিটি, আলসার ইত্যাদির অন্যতম কারণ। ► ডায়াবেটিক রোগীরা পরিমিত পরিমাণে, ডাক্তারের নির্দেশমতো খাবেন। ► রোজার মাসে জাংকফুড বাদ দিলে, ব্যালান্স ডায়েট খেলে দেহের অতিরিক্ত মেদ কমবে, টক্সিন কমবে, ফিটনেস বাড়বে। সারা দিন না খাওয়ায় এবং দিনের বেলা কাজের মাধ্যমে দেহের অতিরিক্ত মেদ কমে। তারপর ব্যালান্সড ইফতারি আবার শরীরকে তৈরি করবে আগামী দিনের আরো এক ধাপ ফিটনেস বাড়ানোর জন্য।

ব্যায়ামও করুন যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, রমজানে তাঁরা হালকা কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। এতে ওজন কমাসহ কিছু উপকারিতা মেলে।

হাঁটা রোজায় দৌড়ানোর বদলে সকালের দিকে একটু হাঁটতে পারেন। যাঁরা অন্যান্য সময় হাঁটতেন, তাঁদের সমস্যা না হলে এ সময়ও হাঁটুন, তবে আগের চেয়ে হাঁটার সময় কিছুটা কমিয়ে আনুন।

যোগব্যায়াম রোজা রেখে যোগব্যায়াম করতে কোনো বাধা নেই। তবে এই ব্যায়ামের কঠিন আসনগুলো বাদ দিয়ে সহজ আসন বেছে নিন।

অ্যারোবিকস প্রতিদিন ১৫/২০ মিনিট করে অ্যারোবিকস করতে পারেন।

হালকা কাজ বাসা-বাড়িতে প্রতিদিন হালকা কাজ যেমন—ঘর পরিষ্কার কিংবা বাগানের পরিচর্যা করতে পারেন।

সতর্কতা ♦ রোজার সময় ওয়েট লিফটিং না করাই ভালো। ♦ অতিরিক্ত সাইক্লিং বা সাঁতার নয়। এতে ঘাম ঝরে শরীর ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে। ♦ কোনো ধরনের শারীরিক অসুস্থতা থাকলে ব্যায়াম নয়।

লেখক : প্রফেসর ইমেরিটাস, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক

news24bd.tv/health