‘দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা শীর্ষে’

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নাম শীর্ষে। বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজুয়্যাল রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়াও আরেকটি যৌথ গবেষণায় বলা হয়েছে- বিশ্বের বায়ুদূষণ কবলিত ১৪টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আবস্থায় রয়েছে ঢাকা।

বৈশ্বিক বায়ু দূষণের ঝুঁকি বিষয়ক ‌‘দি স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার’ শীর্ষক ২০১৯ সালের রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

এর অর্থ শুধু রাজধানী নয়, সমগ্র দেশের পরিবেশ দূষণ উদ্বেগজনক।

বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিবেশ অধিদপ্তরে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ দেখা গেছে শুধু ঢাকা নয়, এর চারপাশের শহরগুলোতেও বাতাসে দূষণের মাত্রা চরম অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় বলা হয়েছে বিশ্বের বায়ুদূষণ কবলিত ১৪টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আবস্থায় রয়েছে ঢাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম জানিয়েছেন, ঢাকার রাস্তায় দূষণের মাত্রা সহনীয়মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। আবাসিক এলাকার জানালার পাশেও তা ক্ষতিকর মাত্রায় রয়েছে।

জাতীয় বক্ষব্যাধী হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার সাইদুল ইসলাম জানান, বায়ুদূষণের শিকার হয়ে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীরা ইনহেলার নিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না। তাদের অক্সিজেন মাস্কের মাধ্যমে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও স্বাভাবিক শ্বাস নিতে হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ভাষ্যমতে, গত বছরের প্রায় অনেকাংশ দিন আমরা দূষিত বায়ুর সাগরে ডুবে ছিলাম যা ক্রমশ বাড়ছে। পরিবেশ দূষণের মাত্রা আগে থেকেই বেশি ছিল, কিন্তু ইদানিং দূষণ বিশেষ করে শহরজুড়ে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির ফলে দূষণ এমন বিপজ্জনক হারে বাড়ছে।

সম্প্রতি দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ঢাকার পার্শবর্তী ইটের ভাটায় দূষণ রোধ করতে সেগুলি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

আদালতের একই নির্দেশনা মেনে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে রাস্তায় পানি ছিটিয়ে ধূলা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, নতুন সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৪৬ ধারায় পরিবেশ দূষণকারী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনার ব্যাপারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

এই ধারা লঙ্ঘনের দণ্ড সম্পর্কে ৮৯ ধারায় বলা আছে, যেসব মোটরযান থেকে দূষিত ধোঁয়া নিঃসরণ হবে উক্ত মোটরযানের চালক বা মালিক বা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ৩ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক এক পয়েন্ট কর্তন হবে।

তবে এখনো এ আইনের কার্যকর প্রয়োগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এর আগে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রন) আইন, ২০০৫ এর ধারা ৪ এ পাবলিক প্লেসে এবং পাবলিক পরিবহণে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান আছে। তবে এ আইন কার্যকর হতে কেউ দেখেনি।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)